রাজস্ব আয় ও এডিপি বাস্তবায়নের হার বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনেরও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে সোমবার এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে অর্থ বিভাগ দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির তুলনামূলক চালচিত্র সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভা এ প্রতিবেদনের বিষয়ে অবহিত হয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। বিনিয়োগ, উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়িয়ে এটা করতে হবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হার বাড়াতে বলেছে মন্ত্রিসভা। সেজন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন দক্ষতা বাড়ানো দরকার। এডিপির বাস্তবায়ন হার ভাল। চলতি অর্থবছরে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার ২৮ শতাংশ, গত বছর এটা ছিল ২৭ শতাংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এডিপি বাস্তবায়ন হার বাড়াতে মন্ত্রী-সচিবদের একসঙ্গে বসে আলোচনা ও পর্যালোচনার অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি বলেন, রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা, জনবল বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এটা করতে হবে। পাশাপাশি করবহির্ভূত আয় বাড়াতে হবে। সম্প্রতি সরকার এটার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান মোশাররাফ হোসাইন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক চালচিত্রের এ প্রতিবেদনটি আরও সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করবে।

প্রতিবেদনে ২০০১-২০০২ অর্থবছর থেকে শুরু করে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর পর্যন্ত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে মোশাররাফ হোসাইন বলেন, ২০০১-২০০২ অর্থবছর থেকে ২০০৫-২০০৬ পর্যন্ত এই ৫ বছরে গড় তথ্য, পাশাপাশি ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১৩-২০১৪ পর্যন্ত তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গত বছরে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত দেশের সামষ্টির অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় ছিল। এ সময়ে গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ১৪ হারে। সরকারি বিনিয়োগ আগের ৫ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বেড়েছে তিনগুণ, মাথাপিছু আয় বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।’

এছাড়া রাজস্ব জিডিপির অনুপাত, এডিপি বাস্তবায়ন হার, বাজেটের আকার, চাল উৎপাদন, আমদানি-রফতানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। দরিদ্র, অতিদরিদ্র, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে বলেও জানান তিনি।

সরকারের আর্থিক ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশল ও জনকল্যাণমূলক দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানান মোশাররাফ হোসাইন।