রঙ্কি-এলিয়টের ঝড়ে উড়ে গেলো শ্রীলঙ্কা
ইনিংসের প্রথম বলেই আউট মার্টিন গাপটিল। ২০ ওভারের মধ্যে টপঅর্ডারের আরো চার ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাওয়ায় নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৯৩/৫। কিন্তু এরপর যে বিভীষিকা সেটা কি কল্পনাও করতে পেরেছিল শ্রীলঙ্কা? কিউইদের খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলা লুক রঙ্কি ও গ্র্যান্ট এলিয়টের ব্যাটে এমন তাণ্ডব ভর করল যে ৬ষ্ঠ উইকেটে গড়লেন রেকর্ড জুটি। ডানেডিনে সিরিজের পঞ্চম ওয়ানডেতে স্বাগতিকরাও (৩৬০/৫) পৌঁছুল রানশৃঙ্গে। জবাবে তিলকারত্নে দিলশানের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ৩৮ বল বাকি থাকতে ২৫২ রানে গুটিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা ম্যাচটা হেরে গেছে ১০৮ রানে। শেষ দুই ম্যাচে হারলেও সিরিজটা অন্তত খোয়াতে হচ্ছে না ৩-১ এ এগিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের।
স্কোরবোর্ডে যে রান উঠতে প্রতিপক্ষের পাঁচ ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন সেই ৯৩ রান উদ্বোধনী জুটিতেই তোলেন থিরিমান্নে ও দিলশান। সাঙ্গাকারার সাথে ৪৮ ও ৩য় উইকেটে মাহেলা জয়াবর্ধনের সাথে ৭০ রানের জুটিতে লঙ্কানদের লড়াইয়ে রেখেছিলেন ক্যারিয়ারের ২০তম সেঞ্চুরি করা ডানহাতি ওপেনার। কিন্তু এই জুটির সাথে সাথে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে শ্রীলঙ্কার ইনিংস। আট ওভারের মধ্যে মাত্র ৪১ রানে সফরকারীরা হারায় শেষ আট উইকেট। নেলসনে চতুর্থ ওয়ানডেতেও ৩১ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট খুইয়েছিল লঙ্কানরা। নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ, বিশেষকরে ট্রেন্ট বোল্টের সামনে কাল অল্পতে গুটিয়ে যায় সফরকারীদের লেজ। তবে জয়ের মঞ্চটা তৈরি করে রাখেন এলিয়ট ও রঙ্কি। ম্যাচ সেরার পুরস্কারটাও ভাগাভাগি করেছেন দু’জন।
নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক বয়সী (৩৫ বছর) ব্যাটসম্যান হিসেবে কাল পাঁচ নম্বরে নেমে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেছেন এলিয়ট। ৯৬ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই ডানহাতি। বিশ্বকাপের দলে তাঁকে দেখে যাদের ভ্রু কুঁচকে উঠেছিল তাদের জবাব দিতে বল হাতেও নিয়েছেন দুই উইকেট। আর সাত নম্বরে রঙ্কি তো কাল ২২ গজে নেমেছিলেন লঙ্কান বোলারদের রীতিমত খুন করতে।
মাত্র ৭৪ বলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন অঙ্ক ছোঁয়া এই ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ৯৯ বলে ১৪ চার ও ৯ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১৭০ রানে। মহেন্দ্র সিং ধোনি (১৮৩) ও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের পর ওয়ানডেতে কোনো উইকেটরক্ষকের এটাই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আর সাত নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে রঙ্কির ইনিংসটাই সবার ওপরে। ২০০৭ সালে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে ১৩৯ রানে অপরাজিত ধোনিকে টপকে নতুন রেকর্ড গড়েন রঙ্কি। ওই ম্যাচে জয়াবর্ধনে-ধোনিকে (২১৮ রান) ছাড়িয়ে ৬ষ্ঠ উইকেটে এলিয়ট-রঙ্কির রেকর্ড ২৬৭ রানের জুটিতে ভর করেই তো ৯৩/৫ থেকে নিউজিল্যান্ডের স্কোর গিয়ে ঠেকেছে শীর্ষ আট দলের মধ্যে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহে (৩৬০/৫)।
নিউজিল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩৬০/৫ (ম্যাককালাম ২৫, উইলিয়ামসন ২৬, টেলর ২০, রঙ্কি ১৭০ অপ, এলিয়ট ১০৪ অপ, কুলাসেকারা ২/৭১, থিরিমান্নে ২/৩৬)।
শ্রীলঙ্কা : ৪৩.৪ ওভারে ২৫২/১০ (থিরিমান্নে ৪৫, দিলশান ১১৬, জয়াবর্ধনে ৩০, মেন্ডিস ১৮, বোল্ট ৪/৪৪, সাউদি ২/৪২, ম্যাকক্লিনাগান ২/৫৬, এলিয়ট ২/৪২)।
ফল : নিউজিল্যান্ড ১০৮ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৭ ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ড ৩-১ এ এগিয়ে।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : গ্র্যান্ট এলিয়ট ও লুক রঙ্কি (নিউজিল্যান্ড)।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।