- হোম
- >
- বায়োগ্রাফি
- >
- আজ অমল বোসের মহাপ্রয়াণ দিবস
আজ অমল বোসের মহাপ্রয়াণ দিবস
আজকের দিনে (২৩ জানুয়ারি), বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের খ্যাতিমান অভিনেতা অমল বোস মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেন মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে। ১৯৬৩ সালে থেকে তিনি ক্লাব থিয়েটার-এ মঞ্চ নাটকে কাজ করতেন। পাশাপাশি চলচ্চিত্র, টিভি, বেতার, বিজ্ঞাপনচিত্রসহ সর্বক্ষেত্রেই ছিল তাঁর দীপ্ত পদচারণা। ১৯৬৬ সালে তিনি প্রথম রাজা সন্ন্যাসী ছবিতে অভিনয় করেন।
প্রারম্ভিক জীবন
অমল বোস ১৯৪৩ সালে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ষাটের দশকের প্রথম থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হন। সেই সুবাদে ঢাকাতেই তিনি জীবনের সিংহভাগ সময় কাটিয়েছেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে ছিল তাঁর স্ত্রী - স্বাতী বোস, একমাত্র মেয়ে - মন্দিরা বোস ও মেয়ের জামাই - ইন্দ্রজিৎ সরকার।
জনপ্রিয় এ অভিনেতা পেশাগত জীবনে জুট মিলস্ কর্পোরেশনের সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে চাকুরী জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
অভিনয় জীবন
মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে ছিল তার উজ্জ্বল পদচারনা। সংক্ষেপে তার অভিনয় জীবনের উল্লেখযোগ্য কাজগুলো তুলে ধরা হল।
মঞ্চ নাটক
১৯৬০-এর দশকে অমল বোস তার অভিনয় জীবন শুরু করেন মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে। তিনি ১৯৬৩ সালে থেকে ঢাকা ক্লাব থিয়েটার-এ মঞ্চ নাটকে কাজ করেছেন। নুরুল মোমেনের নাটক আলো ছায়া তার নির্দেশনায় দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। সেই সময় তিনি অবসর, সপ্তরূপা, শৈবাল ও রংধনু নাট্যগোষ্ঠীর সঙ্গে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন।
চলচ্চিত্র জগৎ
১৯৬৬ সালে 'রাজা সন্ন্যাসী' ছবিতে অভিনয় করে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেছিলেন তিনি। এরপর 'তিনি নীল আকাশের নীচে', 'শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ' সহ বহু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন অমল বোস।অভিনয়ের পাশাপাশি সত্তরের দশকে 'কেন এমন হয়' নামের ছবিটি পরিচালনা করেন তিনি। ২০০৪ সালে মতিন রহমান পরিচালিত 'রং নাম্বার' এবং মুশফিকুর রহমান গুলজারের 'কুসুম কুসুম প্রেম' ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন।
টেলিভিশন জগৎ
বাংলাদেশ টেলিভিশনের সার্বজনীন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে প্রচারিত বিশেষ নাটিকায় অসুর চরিত্রে অভিনয় করে তিনি 'জাতীয় মহিষাসুর' হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। দীর্ঘ ৩৮ বছর ঐ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর বিশেষ নাটিকায় কংসের চরিত্রে অভিনয়েও তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
এছাড়াও, বিশিষ্ট পরিচালক ও উপস্থাপক হানিফ সংকেত পরিচালিত জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি'র 'নানা-নাতি' পর্বে অমল বোসের নানা ও মোহাম্মদ শওকত আলী তালুকদারের নাতি চরিত্রটি বহুল আলোচিত হয়। সেই থেকে তিনি নানা নামেই জনপ্রিয়তা লাভ করেন এবং প্রসিদ্ধ হন।
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
রাজা সন্ন্যাসী, নীল আকাশের নীচে, মহুয়া, সোনালি আকাশ, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, গুনাই বিবি, রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত, অবিচার, আজকের প্রতিবাদ, আমি সেই মেয়ে, তোমাকে চাই, অজান্তে, মন মানে না, কাজের মেয়ে, আমি তোমারী, তুমি শুধু তুমি, সন্তান যখন শত্রু, বিয়ের ফুল, তোমার জন্য পাগল, মিলন হবে কতো দিনে, ক্ষেপা বাসু, মন, ভালবাসা কারে কয়, হঠাৎ বৃষ্টি, শ্বশুরবাড়ী জিন্দাবাদ, মায়ের সম্মান,রং নাম্বার, কুসুম কুসুম প্রেম সহ শতাধিক সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেছেন।
সম্মাননাঅমল বোস তার দীর্ঘ অভিনয় জীবনে নব্বইয়ের দশকে পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম নির্মিত "আজকের প্রতিবাদ" ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
মহাপ্রয়াণ২০১২ সালের ২৩ জানুয়ারিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল অমল বোসের। কিন্তু তিনি সেই দিন সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, এবং তাকে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। পরবর্তীতে বেলা ১২টায় তাঁর মেয়ের জামাই ইন্দ্রজিৎ সরকার হৃদরোগজনিত কারণে অমল বোসের মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করেন।
আজ খ্যাতিমান এই অভিনেতার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে তার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হল। তাকে হারানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন এক অমূল্য অভিনেতাকে হারিয়েছে বলে স্বীকার করেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।