সমাবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে যাবে জবি শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় তিরিশ হাজার স্নাতোকোত্তর শিক্ষার্থী সমাবর্তন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা একটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপদান করেছেন তারাই পাচ্ছেন না সমাবর্তন। গেল বছর এপ্রিলে সনদ বিতরনের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই সমাবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কথা আমলে নিচ্ছেনা জবি প্রশাসন। সমাবর্তন দিতে জায়গা সংকট দেখানো হচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
জানা গেছে, ততকালীন জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপদান দিতে ২০০৩ সাল থেকে লাগাতর আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রূপ দিতে বাধ্য হয় ততকালীন সরকার। আর এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন ২০০৩-২০০৪ ও ২০০৪-২০০৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা। আর তারাই সমাবর্তন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ততকালীন কলেজ আমলের ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৬৬ জন এবং ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের ১৫ হাজার ৭১০ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়। এতে কলেজ আমলের মোট ১৯ হাজার ৩৩৭ জন শিক্ষার্থীর এ সনদ পাওয়ার কথা। এছাড়া ২০১২ সালের ১৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে বলা হয়, কলেজ আমলের দুটি ব্যাচসহ মোট ২২ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষার্থী মাস্টার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে সে সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থীর জন্য সমাবর্তন আয়োজনের কোন ইচ্ছা নেই প্রশাসনের।
জানতে চাইলে ছোট ক্যাম্পাসের অজুহাত দেন জবি ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। তিনি বলেন, সমাবর্তন দিতে ক্যাম্পাসে রাষ্ট্রপতি আসবেন। রাষ্ট্রপতির সাথে কমপক্ষে ৩০টি গাড়ি আসবে। গাড়ি রাখার জায়গা এই ক্যাম্পাসে নেই। সমাবর্তনের ব্যাপারে একাডেমিক কাউন্সিলে কোন আলোচনা হয়নি বলে আরো জানান তিনি।
এদিকে সমাবর্তন ছাড়া সনদ নিবেননা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
রোববার ২০০৪-২০০৫ সেশনের হামিদ, জুনায়েদ ও মনজুর সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছিলেন জবি ক্যাম্পাসে। ভারাক্রান্ত মনে তারা বলেন, কয়েকদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হচ্ছে। কিন্তু আমরা সমাবর্তন পেলাম না। আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রয়োজনে আবার আন্দোলন করব। সমাবর্তনের জন্য ভিসি বরাবর আবেদন করার জন্য তারা সংঘবদ্ধ হবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে সমাবর্তন থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয় ঢুকেছে বর্তমান পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মনে। তাই সমাবর্তনের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে শিক্ষার্থীদের একাংশ।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ বলেন, গেল বছর মার্কেটিং বিভাগের একটি বিশেষ ক্লাস নিতে এসে জবি ভিসি বলেছিলেন ডিসেম্বরে সমাবর্তনের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। সমাবর্তনের দাবিতে শিগগির আন্দোলনে নামবেন বলে জানান একাধিক শিক্ষার্থী।
আগামী সপ্তাহের রোববার থেকে সমাবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, জবি সংসদ। সংসদের আহবায়ক আবু তাহের বলেন, রোববার গণস্বাক্ষর কর্মসূচীর মাধ্যমে আন্দোলন শুরু হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।