ছাতকসহ সিলেট বিদ্যুতায়ন অফিসে তোলপাড়!
ছাতক ও সিলেটের পিডিবির সাব-ষ্টেশনের স্টোর রুমে জমা না দিয়ে রাতের আঁধারে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী হস্তক্ষেপে তামার তার উধাও হয়েছে। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৫৭ কোটি টাকা মূল্যের পুরাতন তামার তার উধাও নিয়ে ছাতক সহ সিলেট বিদ্যুতায়ন অফিসে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সাড়ে ২৪ টন তামার তার। উন্নয়ন সংস্কারের নামে চলছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ পন্থায় লুটপাট। পুরাতন লাইন মেরামতের নামে চলছে গ্রাহকের কাছ থেকে লাখ-লাখ টাকা চাঁদাবাজি। প্রকল্প অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ। ট্রান্সফরমার বিকল, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, নতুন লাইন সম্প্রচার এবং নতুন মিটারের সংযোগ দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। পিডিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তা থেকে শুরু করে লাইনম্যান পর্যন্ত ট্রান্সফরমার চুর চক্রের সাথে সু-সম্পর্ক রয়েছে। এদের কাছ থেকে মাসোহারা বখরা পায় বলে সূত্রে জানায়।
বিদ্যুত বিল নিয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘ দিনের চরম ভোগান্তি। গ্রাহকদের রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। মিটারের রিডিং চেক না করে অফিসে বসে মনগড়া বিল তৈরী করে গ্রাহকদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করছে অতিরিক্ত টাকা। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলেও কোন ফল পায়নি।
অভিযোগ উঠেছে, মোটা অংকের অর্থের বিনিয়মে উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত প্রকল্প অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও স্থানীয় প্রভাবশালী দালাল চক্র। জ্বলছে আলো চলছে দেশ, এ শ্লোগান পিডিবির খাতা পত্রে লেখা থাকলেও বাস্তবে উল্টো।
জানা যায়, ছাতক পৌর শহরের রেল ষ্টেশন, কলেজ রোড, বাগবাড়ী, মধ্যবাজার, মাছ বাজার, পুরাতন সিমেন্ট কোম্পানী ঘাট, কালিবাড়ী, মন্ডলীর ও লাল মসজিদ এলাকার পিডিবি’র পুরাতন তামার তার প্রায় ৫কিলোমিটার (৩৩ হাজার কেভি) রদবদল করে নিু মানের অ্যালুমিনিয়াম তার দ্বারা।
গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ১১ হাজার কেভি লাইন রদবদলের নামে প্রায় সাড়ে ২৪টন তামার তার গায়েব করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৫৭কোটি টাকা। ৫কিলোমিটার লাইন সংস্কার কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইনতিয়াজ’র পরিচালক মুন্না কর্তৃক ২৫টনের মধ্যে ৪শ থেকে ৫শ কেজি তার সিলেট কুমার গাঁও এলাকায় পিডিবির স্টোর রুমে জমা আছে। জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে পূর্ণ সংস্কার কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের প্রথম দিকে। এ প্রকল্প কাজের মেয়াদ ছিল তিন বছর। প্রকল্পের নাম আরমান প্রকল্প-০১। সূত্রে জানায়, তামার তার গুলো রাতের আঁধারে সিলেটের নিবার্হী প্রকৌশলী সানাউল্ল্যা, সহকারী প্রকৌশলী (প্রজেষ্ট) এমএ রহিম, ছাতক আবাসিক প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন ও কর্মচারী জাকির হোসেন গংদের সহায়তায় অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে পাচার করে। রাতের আঁধারে ছাতক ও সিলেটের তামাবিল সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার হয়েছে বলে সূত্রে জানায়। অবৈধ ভাবে তামার তার বিক্রয় করা টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছাতক ও সিলেট পিডিবি অফিসের কর্মকর্তা,কর্মচারী ২ ভাগে বিভক্ত হয়েছে।
সিলেট বিভাগের প্রকল্প কর্মকর্তা এমএ রহিম’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ইনতিয়াজ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছাতক পৌর শহর এলাকায় বিদ্যুতায়ন পূর্ণ সংস্কারের কাজ পায়। এসব কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। জমাকৃত তারের হিসাব জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানালেও কুমারগাঁও পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মোজাফ্ফর আলী জানিয়েছেন স্টোর রুমে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৪থেকে ৫শ’ কেজি ওজনের তার জমা করেছে। ছাতক আবাসিক প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে পিডিবির তার পরিবর্তন করা এবং স্টোর রুমে জমাকৃত তারের পরিমান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। এব্যপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ##
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।