গোবিন্দ হালদার-এর মৃত্যুতে উদীচী'র শোক
মুক্তিযুদ্ধকালীন অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গীতিকার গোবিন্দ হালদার-এর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এক শোক বার্তায় উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি কামাল লোহানী ও সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সরদার বলেন, গোবিন্দ হালদারের মৃত্যুতে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এক গৌরবময় উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে যখন বাঙালি জাতি পাকিস্তানি শাসক ও শোষকদের নানা অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল, যখন সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে নিজের জীবন বাজি রেখে দেশকে স্বাধীন করতে প্রস্তুতি নেয় কোটি বাঙালি, তখন গোবিন্দ হালদারের রচিত গানগুলো তাদেরকে সেই লড়াইয়ে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর তাতে যোগ দিয়ে তিনি রচনা করেন “মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি”, “পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল”, “এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা” প্রভৃতি অসংখ্য কালজয়ী গান। এছাড়াও রয়েছে “পদ্মা মেঘনা যমুনা”, “লেফট রাইট লেফট”, “হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার”, “চলো বীর সৈনিক” প্রভৃতি গান। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে নিয়মিতভাবে প্রচারিত তাঁর রচিত গানগুলো শুনে বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধারা নতুন অনুপ্রেরণা ও উদ্যম নিয়ে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। স্বাধীনতার চার দশক পেরিয়ে গেলেও এখনও যেকোন প্রগতিশীল আন্দোলন সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষে জনমত গঠনের ক্ষেত্রে গোবিন্দ হালদারের গানগুলো বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।
১৯৩০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয় জন্ম নেয়া গোবিন্দ হালদার ছোটবেলা থেকেই প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার সাথে পরিচিত হন। পরিণত বয়সে স্বাভাবিক কারণেই তিনি জড়িয়ে পড়েন বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির দূরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছিলেন তিনি। দেশের হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এক পর্যায়ে কলকাতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য যান গোবিন্দ হালদার। শেষ পর্যন্ত কলকাতারই একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ জানুয়ারি সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান গীতিকার।
মুক্তিযুদ্ধকালীন অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গীতিকার গোবিন্দ হালদার-এর মৃত্যুতে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন উদীচী’র কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।