রাঙ্গামাটিতে মেডিক্যাল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধনের প্রতিবাদে সমাবেশ
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে মেডিক্যাল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম উদ্বোধনের প্রতিবাদে মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেন নাগরিক সমাজের ব্যাক্তিবর্গরা।
আজ সকাল ১০ টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে নাগরিক সমাজের উদ্যোগে এই প্রতিবাদ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেন। এই সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। মেডিক্যাল কলেজের কার্যক্রম উদ্বোধন করার প্রতিবাদে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলায় জেলায় ১০ই জানুয়ারি ২০১৫ নৌপথ ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতারা বলেন, অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ভাবে শেষ হতে পারত।
কিন্ত সমস্যা দেখা দেয় কথিত মেডিক্যাল কলেজ বাস্তবায়ন কমিটি অবরোধ প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেন। তার সাথে যোগ দেয় পার্বত্য জেলা আওয়ামী লীগ। আরও যোগ দেয় বাঙ্গালি শেল্টারদের বিভিন্ন ভুঁইফোড় সংঘটন। ফলে পরিষদের ঘোষিত কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে আবারো জাতিগত সহিংসতা ঘটনাবলি সংঘটিত হয়েছে।
তারা বলেন দেশের নাগরিক সমাজও এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য সরকারের কাছে জোড় দাবি জানিয়ে আসছিল। পার্বত্য চট্রগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন বাদ দিয়ে এই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। অপরদিকে রাঙ্গামাটিতে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যর নামে জোট তৈরি করে মেডিক্যাল কলেজ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করার বিষয়টিও আমাদের নজরে এসেছে। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ইসলামী ছাত্র সেনা সহ বিভিন্ন ছাত্র সংঘটন এই ছাত্র ঐক্য গড়ে তোলে।
নাগরিক সমাজের ব্যাক্তিত্ব সৈয়দ আবুল মকসূদ বলেন, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে আছে। শুধু পার্বত্য চট্রগ্রামেই নয় প্রত্যেকটি গ্রাম ও ইউনিয়নে মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য পুরাতন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। দেখতে হবে যে সেখানে কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার মত অবস্থা আছে কি না। যেখানে প্রাইমারি স্কুলই ঠিক নেই সেখানে কি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয় ? কিন্ত সরকার পার্বত্য চট্রগ্রামে একটি সাধারণ অফিসারদের নিয়ে কমিটি গঠন করে, কিন্ত তারা যাচাই না করেই সেখানে মেডিক্যাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় করার অনুমতি দিয়েছে।
নাগরিক সমাজ সরকারের কাছে কিছু দাবি উত্থাপন করে সেগুলো হচ্ছে,
১। ১০-১১ জানুয়ারি ২০১৫ রাঙ্গামাটিতে জাতিগত সহিংসতা ও সাম্প্রদাইক হামলার মুল পরিকল্পনা কারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
২। রাঙ্গামাটিতে গঠিত সাম্প্রদায়িক হামলার অনুসন্ধানে উচ্চক্ষমতা সম্পপন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৩। হামলায় খতিগ্রস্থ ব্যবসা
প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ক্ষুদ্র ব্যবসাইদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
৪। মেডিক্যাল কলেজের কার্যক্রম সহ পার্বত্য আদিবাসীদের সম্মতি ব্যাতি রেখে সকল প্রকার চাপিয়ে দেওয়া সকল প্রকার উন্নয়ন থেকে সরকারকে বিরত থাকতে হবে।
৫। পার্বত চট্রগ্রামে চুক্তি বাস্তবায়নে সময়সূচী ভিত্তিক কর্ম পরিকল্পনা ঘোষণা করতে হবে।
৬। রাজশাহী কলেজের আদিবাসী ছাত্র বাবলু হেম্ব্রমের হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে।
সমাবেশ শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলটি শাহবাগ থেকে শুরু করে টিএসসি গিয়ে শেষ হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।