- হোম
- >
- ধর্ম ও জীবন
- >
- তুরাগ নদীর তীরে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেজা শুরু
তুরাগ নদীর তীরে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেজা শুরু
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা। ফজরের নামাজের পর মুসল্লিদের উদ্দেশে ভারতের মাওলানা ইসমাইল হোসেনের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়।
তবে বুজুর্গ মুসল্লিদের উপস্থিতে বৃহস্পতিবার বাদ আসর থেকেই ময়দানে আগত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ঈমান, আমল ও আখলাকের প্রাক বয়ান শুরু হয়।
প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হয়েছে রবিবার। মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য মুসল্লিরা ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে এসে খিত্তা অনুসারে অবস্থান নিয়েছেন। শত সমস্যা পায়ে ঠেলে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই ইজতেমায় এসেছেন তারা।
এবারের বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে দেশের ৩৪ জেলার মুসল্লিরা যোগ দিচ্ছেন। এর জন্য ময়দানকে ৩৯ খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই সব জেলার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে পৌঁছে গেছেন এবং মুসল্লিদের আসা আজও অব্যাহত আছে। পাশাপাশি ভারত, পাকিস্থানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরাও ইজতেমায় যোগ দিয়েছেন। বিদেশি মুসলমানদের জন্য বরাবরের মতো ময়দানের উত্তর পশ্চিম পাশে তৈরি করা হয়েছে বিদেশি নিবাস।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের মধ্যে তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা ট্রেন, মিনিবাস, বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ ছোট ছোট যানবাহনে করে দীর্ঘ পথ হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসেন। অনেক সময় সরাসরি বাস আসতে না পারায় ভেঙ্গে ভেঙ্গে আসতে হয় মুসল্লিদের। সেই সঙ্গে বৃহস্পতিবারের হরতালের কারলে মুসল্লিদের আসতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলে আসছে। এই অবরোধের মধ্যেই ৯ জানুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব হয়। অবরোধের মধ্যে ১১ জানুয়ারি প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় তারা। তার মধ্যেও তাবলিগ জামায়াতের লাখ লাখ সদস্যের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
ইজতেমার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ইজতেমার দ্বিতীয় দফায় অংশ নিতে ইতোমধ্যেই লাখো মুসল্লি সেখানে সমবেত হয়েছেন। বিভিন্ন জেলার কিশোর, যুবক, বয়োজ্যেষ্ঠ সব শ্রেণির মানুষ ইজতেমায় এসেছেন। অনেকে দীর্ঘ চল্লিশ বা ১২০ দিন ইসলামের দাওয়াত শেষ করে ইজতেমায় শরিক হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ইজতেমা শেষে দেশ-বিদেশ ঘুরে ইসলামের দাওয়াত দিতে ৪০ বা ১২০ দিনের জন্য বেরিয়ে পড়বেন। ধনী, দরিদ্র সবাই এখানে এক শামিয়ানার নিচে একসঙ্গে অবস্থান করছেন।
এদিকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের তৎপরতাও দেখা গেছে ইজতেমাকে ঘিরে। প্রথম পর্বে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, ডেসকো, ওয়াসা, সেনিটেশন বিভাগ, রেলওয়ে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সবগুলো বিভাগই দ্বিতীয় পর্বেও দায়িত্ব পালন করবে।
বিশাল এ আয়োজনে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির আগমন এবং প্রস্থানকে নিরাপদ করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘গত পর্বের মতোই মোনাজাতের দিনেও মহাসড়কগুলো থাকবে যানজটমুক্ত। প্রধম পর্বের মতো এবারও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে রয়েছে ৫ স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কাজ করছে পুলিশ, র্যাব, আনসার বাহিনীর ১২ হাজার সদস্য।
ইজতেমায় আগমনের পর থেকে দিন রাত চলছে ধর্মীয় আলোচনা, নামাজ, মসোয়ারা বা পরামর্শ। বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে আসা মো. আব্দুল কদ্দুস ও আবদুর রহমান নামে আরও দুই মুসল্লি গত দুইদিনে মারা গেছেন। উভয়েই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।