আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা ২৪ ঘন্টার হরতালকে অর্ধেকে নমিয়ে এনে এখন ১২ ঘন্টা করা হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমানকে গুলিতে গুরুতর আহত করার প্রতিবাদে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের টানা অবরোধের মধ্যেও আবার এ হরতালের ডাক দেয়া হলো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বরাত দিয়ে দলটির সহদপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছিল। বুধবার রিজভীর দেয়া অপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালনের কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে রিজভী বলেন, গতরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা এবং তাকে গুলি করে গুরুতর আহত করার প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোটের ডাকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ১২ ঘন্টার সর্বাত্মক হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য ২০ দলীয় জোটের ডাকা আগামীকালের হরতাল এবং চলমান অবরোধ কর্মসূচি স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালনের জন্য দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সারাদেশে আগামীকাল ২৪ ঘণ্টার হরতাল পালিত হবে। সে অনুযায়ী শুক্রবার ভোর ৬টায় এ হরতাল শেষ হতো। এদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ‘ও লেভেল’পরীক্ষা রয়েছে। ফলে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অনেকেই মিভিন্ন মিডিয়ায় ফোন করে হরতালের সময়সীমার বিষয়টি নিশ্চিত হতে চান। পক্ষান্তরে হরতালের সময় কমানোয় তারা স্বস্তি বোধ করেন।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানে রিয়াজকে গুলি চালিয়ে তার গাড়িটিও পুড়িয়ে দেয়া হয়। এতে রিয়াজ রহমানের পায়ে দুটি এবং কোমরের নিচে দুটি গুলি লেগেছে। তার প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ফাউয়াজ শুভ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। অবশ্য তিনি এখন আশঙ্কামুক্ত।

অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া বলেছেন, সরকারের উচ্চমহলের উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণেই রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাকে অবরুদ্ধ অবস্থায় দেখে বাড়ি ফেরার পথে পুলিশ বেষ্টনীর অদূরে রিয়াজ রহমানের ওপর কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। এভাবে নগ্ন হামলা চালিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না বলেও মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া। তিনি দাবি করেন, সরকারের উচ্চমহল থেকে উসকানিমূলক বক্তব্যের পরই রিয়াজ রহমান এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলেন। এর পরিণতি ভালো হবে না বলেও তিনি ক্ষমতাসীনদের সতর্ক করেন।

অন্যদিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, চলমানের অবরোধের অতিরিক্ত হিসেবে বৃহস্পতিবার সর্বাত্মক হরতাল পালনের জন্য সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রসঙ্গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকে অবরোধ চলছে দেশজুড়ে, এর মধ্যেই বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তোরের প্রতিবাদে হরতালও ডাকছে। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্রদলের ডাকে আজও হরতাল পালন করা হবে দেশের ৪টি জেলায়।