দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে নতুন করে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তা শেয়ারবাজারে কোন বিরূপ প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, পূর্বেও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক সময়ে নেতিবাচক অবস্থানে ছিল। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিকরা লেনদেনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করায় সাধারন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ অবস্থায় চলমান পরিস্থিতিতে প্রাতিষ্ঠানিকরা তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখলে বাজার লেনদেনে গতিশীলতা ফিরে পাবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) নতুন স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর পর লেনদেন ভলিউম ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে উঠানামা করছে। এক্ষেত্রে গত ৫ জানুয়ারির পরও একই অবস্থায় বিরাজ করছে। এটা বাজারের স্বাভাবিক গতি। এদিকে সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের পুন:অর্থায়নের অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ছাড় হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা স্বাভাবিক এবং আরো দেড় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এসব বিষয়গুলো শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, শেয়ারবাজারে যারা বিনিয়োগ করে তাদের অধিকাংশ রাজনৈতিক হিসাব নিকাশকে উর্ধ্বে রেখে লেনদেন করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে উঠলে বাজারে লেনদেনের গতিশীলতা আরো বেড়ে যাবে। এজন্য বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে অবশ্যই সকলকে দায়িত্বশীল আচারণ করতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক অবস্থা কিছুটা প্রতিকুলে রয়েছে। তারপরও বাজারে লেনদেনে গতি এবং বিনিয়োগকারীদের অংশ গ্রহণ অনেকটাই ভাল। নতুন সফটওয়্যারের লেনদেন সম্পর্কিত বিষয়গুলো এখনও অনেকে পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি। তবে বর্তমান লেনদেন ভলিউম আরো বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিকদের সক্রিয় ভুমিকা পালন করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা শেয়ারবাজারে পড়বে না। কারণ এখানে যারা বিনিয়োগ করে তারা সবাই তাদের ব্যবসাকে প্রাধান্য দেয়। দলমতের উর্ধ্বে থেকে বিনিয়োগে অংশ নেয়। তাই বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় লেনদেন ভলিউম বৃদ্ধিতে প্রাতিষ্ঠানিকদের কার্যকর ভুমিকা পালন করা উচিত। কারন দেশের অর্থনীতিতে শেয়ারবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। অনেকেই এখানে কর্মসংস্থানে রয়েছে। আরো নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। তাই বাজার সংশ্লিষ্ট সকল বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারের স্বার্থে প্রয়োজনীয় ভুমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে।