শাহজালাল সার কারখানা চলতি বছরেই উৎপাদনে যাবে : শিল্পমন্ত্রী
শাহজালাল সার কারখানায় উৎপাদন চলতি বছরেই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের শেষ ৪ মাস রাজনৈতিক সহিংসতা ছিল। এছাড়া নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় মংলা বন্দর থেকে ভারি মেশিনারি পরিবহণেও বিলম্ব হয়েছে। এ সব কারণে শাহজালাল সার কারখানার নির্মাণ কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়। এরপরও সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে ৯৩ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী কাজ আগামী জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে এবং এর পরপরই উৎপাদন শুরু হবে।’
এই কারখানার বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন বলে তিনি জানান।
শনিবার মন্ত্রনালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর গত এক বছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাফল্য তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ ফরহাদ উদ্দিন, বেগম পরাগ ও সুষেণ চন্দ্র দাসসহ মন্ত্রণালয়ের অধীন কর্পোরেশন বা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে সার ব্যবস্থাপনায় কোন সমস্যা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গতবছর নতুন সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন ইরি-বোরোর পিক সিজন চলছিল। আমরা এ পিক সিজনে সারা দেশে সুষ্ঠুভাবে সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। সার পরিবহণ, বিপণন ও বিতরণের ক্ষেত্রে দেশের কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। এবারও সার ব্যবস্থাপনায় কোনো সমস্যা হবে না।’
তিনি বলেন, সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে সিইটিপির নির্মাণ কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকী কাজ নির্ধারিত সময় এ বছরের জুৃনের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, শিল্পনগরিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত ১৫৫টি ট্যানারির মধ্যে ১৫২টির লে-আউট প্লান জমা পড়েছে এবং এর সব কয়টি অনুমোদন পেয়েছে। অনুমোদিত নক্শা অনুযায়ী ১৪৫টি ট্যানারির মালিক প্লটে নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
মন্ত্রী জানান, গতবছর বিসিকের সহায়তায় সারাদেশে অবস্থিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পগুলোতে এক হাজার ৬৭৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের নিজস্ব বিনিয়োগের পরিমাণ ২৮১ কোটি ২০ লাখ টাকা, ঋণ সংশ্লিষ্ট ইকুইটির পরিমাণ ৪৫০ কোটি ৫৩ লাখ এবং ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ৯৪২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এই বিনিয়োগের আওতায় গত এক বছরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে মোট ৮৯ হাজার ৩৭৫ জন মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে শুধু বিসিক শিল্প নগরীগুলোতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার মানুষের। এ ছাড়া বিসিকের ৭৪টি শিল্প নগরীতে বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের প্রায় ১৮ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে গত এক বছরে শিল্পনগরীর কারখানাগুলোতে প্রায় ৪২ হাজার ৫০৯ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে রফতানি হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী। রফতানির এ পরিমাণ মোট রফতানি আয়ের ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
আমু বলেন, ২০১৩-২০১৪ মৌসুমে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ১৭ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। এ সময় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ লাখ ৮০ হাজার টন। তিনি বলেন, লবণ চাষিদের মূল্য সহায়তা দিতে আমরা ২০১৪ সালে ভোজ্য লবণ আমদানি নিষিদ্ধ করেছি। এতে লবণ চাষিরা উপকৃত হয়েছেন এবং উৎপাদনের প্রতি তাদের মনোযোগ আরো বাড়িয়েছে।
শিগগিরই জাতীয় শিল্পনীতি চূড়ান্ত করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ২৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। এ বাস্তবতা বিবেচনায় জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৫ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এ নীতির খসড়া প্রণীত হয়েছে। খুব শিগগিরই সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের মতামত নিয়ে এ নীতি চূড়ান্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।