খাগড়াছড়ি জেলায় দিন দিন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই শিশু শ্রমিকরা ভারী কাজ করতে গিয়ে নানা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে বরণ করছে পঙ্গুত্ব। জেলা ও উপজেলা শহর ঘুরে দেখা যায়, কম বয়সী শিশুরা বিভিন্ন যানবাহন, মিল কারখানা, তেলের পাম্প, দোকানপাট, রিক্সা চালনা, নাপিতের দোকানে, ওয়ার্কসপসহ নানা কঠিন কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী এসব শিশু শ্রমিকরা রাত দিন বিভিন্ন কাজের তাদের শ্রম দিচ্ছে। নাম মাত্র কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এসব শিশুরা কাজ করছে।

তথানুন্ধানে জানা যায়, জেলার এখনো প্রায় দোকানগুলোতে ৮-১৬ বছর বয়সী শিশুরা বিভিন্ন রকম কাজ করছে। তার মধ্যে বিশেষ করে সাইকেলের দোকান, মোটর দোকানে, গ্রিল ওয়ার্কশপে ও অনেক কঠিন কাজে করছে বলে জানা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, খাগড়াছড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রিল ওয়ার্কশপের মোঃ দুলাল (১৪) প্রায় ২ বৎসর যাবৎ এ ওয়ার্কশপে কাজ করছে। সে মাদ্রাসায় ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেছিলো।আর্থিক অভাবের কারণে পড়াশুনা করতে পারেনি। তারা দুই ভাই এক বোন। পরিবারের দায়িত্বভার এখন পুরোপুরি তার উপর। প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পারিশ্রমিক পায় দুলাল। এ দিয়ে কোনো রকম সংসার চলে। তার বাবার শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। তার মা অন্যের বাসায় কাজ করেন বলে সে জানায়।

খাগড়াছড়ি শহরে এসব শিশুরা অনায়সে যে কারো চোখে পড়ে নানা কাজে শ্রমিক হিসেবে।যে বয়সে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, অথচ রিক্সা চালনার মত কঠিন কাজে সে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে তার বয়সী শিশুদের। মাতা-পিতাও দারিদ্রতার কষাঘাতের যাতাকলে পড়ে তাদের আদরের সন্তানকে শিশু শ্রমিক হিসাবে কাজে পাঠাচ্ছেন।

যানবাহনে চলতে গেলে দেখা যায় শিশুরা হেল্পার হিসাবে কাজ করছে। এসব কঠিন কাজ করতে গিয়ে শিশুরা নানা ধরণের বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়ে পঙ্গত্ব বরণ করছে। এসব শিশুদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার যেন কেউ নেই।

খাগড়াছড়ি জনসাধারণ অচিরেই জেলায় শিশু শ্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।