লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের প্রধান বাড়ী (মাষ্টারপাড়া) সীমান্ত থেকে জামাল হোসেন (৩৫) নামে রক্তাক্ত যখম অচেতন অবস্থায় এক বাংলাদেশিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উদ্ধার করেছে বুড়িমারী স্থলবন্দর বিজিবি। ওই সীমান্তের ৮৪৩ নম্বর আর্ন্তজাতিক মেইন সীমানা পিলারের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

আহত জামাল হোসেন যশোরের নড়াইলের সদর উপজেলার মুলাশ্রী (বাগুডাঙ্গা) এলাকার হেমায়েত আলীর ছেলে। বর্তমানে তাকে বিজিবির তত্বাবধানে পাটগ্রাম উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অচেতন জামাল হোসেনের জ্ঞান ফিরেছে। এখন তিনি কথা বলতে পারলেও পুরোপুরি স্মৃতিশক্তি ফিরে পায়নি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছে।     

এলাকাবাসী ও বিজিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় কৃষকরা জমিতে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পান একজন অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃত দেহ সীমান্তের এপারে ভারতীয় কাঁটা তারের বেড়ার কাছে পড়ে আছে। বিষয়টি স্থানীয় বুড়িমারী বিজিবি ক্যাম্পে জানালে লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বুড়িমারী স্থলবন্দর কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার শামসুল হকের নেতৃত্বে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএসএফের পিটুনিতে রক্তাক্ত যখম জামাল হোসেন নামের ওই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতালে এনে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির জ্ঞান ফিরলে তার পরিচয় জানা যায়। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জামাল হোসেন নিজেকে বাংলাদেশি দাবী করে বলেন, ‘আমি নড়াইলের মুলাশ্রী(বাগুডাঙ্গা) এলাকার হেমায়েত আলীর ছেলে। আমি ভারতের কলকাতা ও শিলিগুড়িতে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। বুধবার দালালের মাধ্যমে দেশে ফেরত আসার সময় চ্যাংড়াবান্ধা বাজারে বিএসএফ আমাকে ধরে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে কাঁটা তারের বেড়ার কাছে ফেলে রেখে যায়। পরে জ্ঞান ফিরলে জানতে পারি বিজিবি আমাকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এখন আমি বাসায় ফিরতে চাই।’  

পাটগ্রাম হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘জামাল হোসেন এখনও পুরোপুরি জ্ঞান ফিরে পায়নি। সুস্থ্য হতে কমপক্ষে আরো ২/৩ দিন সময় লাগতে পারে।’

লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আহম্মেদ বজলুর রহমার হায়াতী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আহত জামাল হোসেনকে উদ্ধার করে বর্তমানে পাটগ্রাম হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতীয় কুচবিহার-৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমানডেন্ট বিএসএফ সদস্য জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সেলফোনে জানিয়েছেন, জামাল হোসেন নামে এক বাংলাদেশিকে স্থানীয় ভারতীয় গ্রামবাসী মারধর করেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।’