পৌষের শীতের আগমনে লালমনিরহাটের প্রকৃতিক রুপ বদলে যাচ্ছে। কৃষকের ধানকাটা ও মাড়াই প্রায় শেষ হয়েছে। সোনালী ধানে কৃষকের গোলা ভরে উঠেছে। ঘরে ঘরে চলছে পিঠা পার্বন আর উৎসব। চলছে আগামী মৌসুমের ফসল চাষের প্রস্তুতি। সবুজ শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে যেমনি প্রকৃতির রুপ বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠ। কখনো সবুজ, কখনো সোনালী, কখনো বা হলুদ এমনি ফসলের মাঠ পরিবর্তনের এ পর্যায়ে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে ঢাকা পড়ছে এ জেলার ফসলের মাঠ। জেলায় এবার সরিষা চাষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে বিশেষ করে নদী বিধৌত এলাকায়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এ অঞ্চলে সরিষা কম আবাদ হয়। বর্তমানে সরিষা একটি লাভজনক ফসলে পরিনত হওয়ায় ধীরে ধীরে সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাঢ় হলুদ বর্ণের সরিষার ফুলে ফুলে মৌ মাছিরা মধু সংগ্রহের জন্য গুন গুন করছে। চলছে মধু আহরণের পালা। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে মাঠে নেমেছে। শীতের শিশির সিক্ত মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। মানুষের মনকে পুলকিত করছে। সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয় কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। শরৎকালের মাঠে মাঠে সবুজের অপার সমারোহ এখন আর নেই। দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য শোভা পাচ্ছে সরিষা ও শীতকালীন সবজি মাঠের শোভা বর্ধন করছে।

গত কয়েক বছর যাবত এ জেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। জেলায় ১৬ শত ২২ হেক্টর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরিষা চাষীরা জানায়, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলো ফলন বেশী হয়। গত বছর প্রতিমন সরিষা ১৮-১৯ শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

তারা আরও জানান, সরিষার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভ জনক ফসল। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে দু-একটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। সেচ ও সার লাগে কম তাছাড়া সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার। প্রতি বিঘায়  ৪/৫ মন সরিষা হয়ে থাকে। সময়ের সাথে সাথে জেলায় বাড়ছে সরিষা আবাদ।