সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ চাদরে ঢাকা পড়েছে। গ্রাম বাংলার চির সবুজের বুকে এ যেন প্রকৃতির আঁকা কাচা হলুদের আল্পনা। ভোরে আলোর আভা ফুটতেই ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জরণে মুখরিত হয়ে উঠছে দিগন্ত জোড়া মাঠ।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সাহস প্রতিবেদককে জানান, চলতি ২০১৪-১৫ মৌসুমে কলারোয়ায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৯শ’ হেক্টর। কিন্তু অনুকূল আবহওয়ায় মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে কলারোয়ায় ব্যাপকভাবে সরিষার আবাদ হয়েছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো ৮০হেক্টর বেশী জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমির মধ্যে বারি-৯, ১৪, ১৫ ও টরি-৭ জাতের সরিষা ৯৫% জমিতে আবাদ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আবাদকৃত সরিষা ক্ষেতে কোন রোগের সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়নি। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষকদের প্রত্যাশা, চলতি আবহাওয়া বজায় থাকলে একর প্রতি এবার সরিষার ফলন পাওয়া যাবে ১.৫ মেট্রিক টন। সরিষার আবাদ ঘরে তুলে মাঘ মাসের শুরুতে এ’সব জমিতে বোরো চাষ আরম্ভ হবে।

এদিকে অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতে শীত পড়তে শুরু করায় সরিষা চাষের জন্য আশির্বাদ হয়ে দেখা দেয়। সরিষার কাঁচা হলুদাভ ফুলের চাদরে ঢেকে গেছে কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকার মাঠ। ভোরে আলোর আভা ফুটে উঠতে মধু আহরণে লাখ লাখ মৌমাছি প্রজাপতির আনাগোনা ক্ষেতে ক্ষেতে। বর্তমানে কৃষির আধুনিকায়নে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থানীয় মৌ-চাষীরা সরিষা ক্ষেতের মধ্যে মৌ-কলোনি স্থাপন করে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে। রঙিন প্রজাপতি আর মৌমাছির মধু আহরণে সরিষা ফুলের পরাগায়ণ ঘটছে। 

সরিষা আবাদকারী কৃষকরা জানায়, এর ফলে একদিকে সরিষার ফলন ভাল হবে। অন্যদিকে, এলাকার বেশ কিছু বেকার মানুষের আত্মকর্মসংস্থান হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার জয়নগরে ৫০হেক্টর, জালালাবাদে ১শ’ হেক্টর, কয়লা ১শ’ হেক্টর, পৌরসভা সদরে ২৫হেক্টর, লাঙ্গলঝাড়ায় ২৫হেক্টর কেঁড়াগাছি ৩শ’৪০ হেক্টর, সোনাবাড়িয়া ৫শ’৫০ হেক্টর, চন্দনপুরে ২শ’১৫ হেক্টর, কেরালকাতায় ১শ’৬০ হেক্টর, হেলাতলায় ১শ’৯০ হেক্টর, কুশোডাঙ্গায় ৮০হেক্টর, দেয়াড়ায় ২০হেক্টর ও যুগিখালি ইউনিয়নে ১শ’২৫ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে সরিষার আবাদ হয়েছে ।

ইতোমধ্যে কোন কোন এলাকায় আগাম চাষ করা সরিষা গাছে ফল ধরেছে। আর কয়েক দিন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে কলারোয়ার চাষীরা এবার সরিষার বাম্পার ফলন ঘরে তুলবে এমনটিই প্রত্যাশা করেছে কৃষক ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।