শ্যালা নদীতে আবারও যান চলাচলের অনুমতি
বাংলাদেশের সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাংকার ডুবির ২৭ দিন পর আজ ঐ নৌপথটি যান চলাচলের জন্য আবার খুলে দেওয়া হচ্ছে।
সরকারের নৌপরিবহন সচিব শফিক আলম মেহেদী বলেছেন, সরকারের আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সীমিত আকারে ঐ পথ দিয়ে বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজ শুধু মাত্র দিনের বেলা চলাচল করবে। তবে কোন তেলবাহী যান চলবে না।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের নির্বাহী পরিচালক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, শ্যালা নদীকে নৌ রুট হিসেবে ব্যবহার করার কারণেই পরিবেশ বিপর্যয়ের একটা আশংকা তৈরি হয়। দুর্ঘটনা ছাড়াও প্রতিনিয়ত নৌ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় নৌযান থেকে নি:সৃত তেল ও বর্জ্যের কারণে নানা ধরনের দূষণ ঘটছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তবে সীমিত আকারে এই নদীতে যান চলাচলের অনুমতি দেয়ায় ঝুঁকি কমবে উল্লেখ করলেও এক্ষেত্রে আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ করে শ্যালা নদী ডলফিনের অভয়া-শ্রম হওয়ায় এবং এখানে কুমিরসহ নানা জলজ প্রাণীর ইকো সিস্টেমের ভারসাম্য রক্ষার উপর জোর দেন তিনি।
সেজন্য দ্রুত বিকল্প নৌপথের ব্যবস্থা করার সাথে সাথে শ্যালা নদীতে কোন ধরনের বিষাক্ত ও দাহ্য পদার্থ বাহী নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা দরকার বলে মনে করেন ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ।
শ্যালা নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনার এক মাসের মধ্যেই আবারও যান চলাচলের অনুমতি দেয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে কতটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, এমন প্রশ্নে ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ততটা গুরুতর না হলেও এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এখনও জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী জাহাজ দুর্ঘটনার পর থেকে এ রুটে সবধরনের জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে এ নৌ-রুটের উভয় প্রান্তে পাঁচ শতাধিক জাহাজ আটকা পড়ে। এতে করে ব্যবসা বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সিমেন্ট ও লবণ কারখানাসহ অন্যান্য শিল্পের কাঁচামাল, সার এবং অন্যান্য অত্যাবশকীয় পণ্যবাহী জাহাজ বন্ধ থাকার ফলে নৌযান শ্রমিক, জাহাজ মালিক এবং দক্ষিণ অঞ্চল/খুলনা বিভাগের ব্যবসায়ী মহল ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।
এছাড়া মংলা বন্দরে জাহাজ গমনাগমনের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনকল্পে বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল অ্যাসোসিয়েশন, কাস্টাল শীপ-ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাসট্রিজ কর্পোরেশন, খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিজসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন বিরাজিত সমস্যা দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানায়।
দ্রুত সমস্যা সমাধান না করা হলে নৌযান চলাচল বন্ধেরও হুমকির দেয়া হয়। কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে সার পরিবহন ও বিভিন্ন শিল্প কারখানা চালু রাখার জন্য কাঁচামাল পরিবহন, নৌযান শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহ এবং মংলা বন্দরকে অচল অবস্থার হাত থেকে রক্ষার জন্য উল্লেখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সুন্দরবন রক্ষা এবং সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিষয়ে সক্রিয় বিবেচনা ও সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।