সারাদেশে বই উৎসব পালিত
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আনন্দমুখর পরিবেশে আজ সারাদেশে বই উৎসব পালিত হয়েছে।
হরতাল থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। আনন্দ-উদ্দীপনার সঙ্গে নতুন বই নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ী ফিরেছে।
কেন্দ্রীয়ভাবে এ বছর শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে এই বই উৎসবের আয়োজন করে।
শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে দেশের সকল প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনাল, মাধ্যমিক (ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণী) এবং এসএসসি ভোকেশনাল শ্রেণীর ছাত্র ও ছাত্রীর মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হচ্ছে। এ বছর ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৪ জন ছাত্র ও ছাত্রীর মধ্যে ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৩টি বই বিতরণ করা হবে।
বই বিতরণে বিশেষত্বের মধ্যে রয়েছে এবারই প্রথমবারের মতো নবম শ্রেণীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি চালু, প্রথমবারের মতো অষ্টম শ্রেণীতে কর্ম ও জীবনমুখী এবং নবম শ্রেণীতে ক্যারিয়ার শিক্ষা চালু, জাতীয় শিক্ষা নীতির আলোকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের সাথে মাদরাসা স্তরের বইয়ের সঙ্গতিবিহীন এবং প্রথমবারের মতো ইবতেদায়ী স্তরের সকল বই চার রঙে মূদ্রণ।
মতিঝিল সরকারি বালক বিদ্যালয়ে বই উৎসব অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ২০১০ সালে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসা স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মোট শিক্ষার্থী ছিলো ২ কোটি ৭৬ লাখ ৬২ হাজার ৫২৯ জন। আর এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৪ জন। তিনি বলেন, এতেই প্রতীয়মান হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দূরদর্শিতার কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। ঝরে পড়ার হার কমে এসেছে।
উল্লেখ্য, ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সরকার মোট বই বিতরণ করেছে ১৫৫ কোটি ৮৩ লাখ ৫৬ হাজার ১২৩টি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে এ ঘটনা বিরল। বিশ্বের অনেক ধনী দেশও বিনামূল্যে বই দিতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ পেরেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল উপেক্ষা করে উৎসব ও আনন্দমুখর পরিবেশে সারাদেশে বই বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা হরতাল উপেক্ষা করে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বই নিয়ে বাড়ি ফিরে।
রাজশাহী থেকে প্রতিনিধি জানান, আজ রাজশাহী মহানগরী ও জেলার ৯টি উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব পালিত হয়েছে। নতুন বছরের প্রথম দিকে ছাত্র-ছাত্রীরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে।
ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তি বই উৎসবে উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী মহানগরীর পিটিআই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বই উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। এতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মেজবাহউদ্দিন চৌধুরী।
শরিয়তপুর থেকে সংবাদদাতা জানান, জেলার ৬টি উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব শুরু হয়েছে। এ বছর জেলার প্রাথমিক স্তরের প্রায় এক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪শ’ সেট এবং মাধ্যমিক স্তরের ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪৬ সেট বই বিতরণ করা হবে।
এ ছাড়া সাতক্ষীরা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নড়াইল, মাদারীপুর, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট, হবিগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও খাগড়াছড়িতে আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব পালিত হয়। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা আনন্দ ও উল্লাসে মেতে ওঠে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।