ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য-ব্যর্থতার ২০১৪
সাফল্য ও ব্যর্থতা এই দুইয়ে মিলেই এগিয়ে চলা। ঠিক যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। হয় এপিঠ না হয় ওপিঠ। হয় ভালো নয় মন্দ। তাই ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গনও এর ব্যতিক্রম নয়। ২০১৪ সাল চলে গেছে কাল গর্ভে। শুরু হয়েছে ২০১৫ এর পথচলা। তাই কেমন ছিল ২০১৪ সালের ক্রীড়াঙ্গন এটা বিশ্লেষণ না করলেই নয়। এ বছরে না পাওয়ার বেদনা যেমন ছিল, তেমনি সাফল্যও কম নয়। আন্তর্জাতিক আসরগুলোয় হকি, শুটিং, হ্যান্ডবল, কারাতে, গলফ, কাবাডি ও কুস্তিতে সাফল্য-ব্যর্থতা ছিল সমভাবেই।
হ্যান্ডবলঃ
পাকিস্তানে আয়োজিত আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ট্রফিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ মহিলা হ্যান্ডবল দল। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে আয়োজিত এ টুর্নামেন্টে মহিলা হ্যান্ডবল দল ফাইনালে পাকিস্তানকে পরাজিত করে ছয় জাতির টুর্নামেন্টে শিরোপা জিতে দেশবাসীকে আনন্দে মাতান।
হকিঃ
হকিতেও ব্যর্থতার চেয়ে সফলতার পাল্লাই ছিল ভারী। বছরের শুরুতে দেশে এশিয়ান গেমস বাছাই পর্বে চ্যাম্পিয়ন হলেও ইনচনে চূড়ান্ত পর্বে চরম ব্যর্থ হন চয়নরা। এশিয়ান গেমস হকিতে ষষ্ঠ স্থান অর্জনের লক্ষ্য থাকলেও অষ্টম স্থান অর্জন করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে। দেশে ওয়ার্ল্ড হকি লিগের প্রথম পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএইচএফ কাপ হকিতে সেরার খেতাব জিতে অনূর্ধ্ব-২১ হকি দল। এশিয়ান গেমসের পর পাকিস্তানি কোচ নাভিদ আলম চলে গেলে দুই মাসেরও বেশি সময় পর নভেম্বরের শেষ দিকে জাতীয় দলের কোচ হয়ে বাংলাদেশে আসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান কোচ গোবিনাথান কৃষ্ণমূর্তি। প্রায় ১ বছর পর নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়েছেন জাতীয় হকি দলের চার খেলোয়াড় জাহিদ হোসেন, রাসেল মাহমুদ জিমি, কামরুজ্জামান রানা ও ইমরান হাসান পিন্টু।
কুস্তিঃ
সাফল্য এসেছে কারাতে ও কুস্তিতেও। অক্টোবরে ভারতের গোয়ায় আয়োজিত পঞ্চম আন্তর্জাতিক কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপে সাতটি স্বর্ণ, চার রৌপ্য, তিন ব্রোঞ্জসহ ১৪টি পদক নিয়ে দলগত বিভাগে রানার্সআপ হয় বাংলাদেশ।কাজাখস্তানে আয়োজিত ১০ এশিয়ান কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে উন্মুক্ত ইভেন্টে ছয় দেশের কুস্তিগিরকে পরাজিত করে দেশকে ব্রোঞ্জপদক উপহার দেন মোঃ বিল্লাল হোসেন। তবে আশার খবর ছিল আরচারিতেও। ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে রিকার্ভ বো ইভেন্টে রৌপ্যপদক জিতেছিলেন ইমদাদুল হক মিলন। ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেইমসএ স্বর্ণপদক জেতেন আরচার রোমান সানা।
গলফঃ
এ বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ গলফে খেলেছেন দেশ সেরা গলফার সিদ্দিকুর রহমান। সারা বছরের পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলেও ভারতে সেইল এসবিআই ওপেনে এবং ফিলিপাইনের ম্যানিলা মাস্টার্স ওপেনে রানার্সআপ ট্রফি জেতেন সিদ্দিকুর। তবে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমস, ইনচন এশিয়ান গেমস ও ফুকেটে আয়োজিত চতুর্থ বিচ গেমসে প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি অ্যাথলেটরা। জুলাইয়ে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে বসে কমনওয়েলথ গেমসের ২০তম আসর। এ গেমসে ১০টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিলেও একমাত্র শুটিং ডিসিপ্লিন থেকেই খানিকটা সাফল্য আসে। ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে আবদুল্লাহ হেল বাকী রৌপ্যপদক জিতে দেশের মান বাঁচান। আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচনে আয়োজিত ১৭ তম এশিয়ান গেমসে ১৩টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়ে একটি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জপদক জেতে বাংলাদেশ।
কাবাডিঃ
মহিলা ক্রিকেট দল রৌপ্যপদক এবং মহিলা কাবাডি দল ব্রোঞ্জ জিতে এশিয়ান গেমসে পদক জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমস থেকে পদক এলেও নভেম্বরে থাইল্যান্ডের ফুকেটে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিচ গেমস ও নানজিংয়ে দ্বিতীয় সামার ইয়ুথ গেমস থেকে অ্যাথলেটদের ফিরতে হয় একেবারে খালি হাতেই। এ গেমসের সাতটি ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়েও কোনো পদক জিততে ব্যর্থ হন লাল-সবুজ অ্যাথলেটরা। বিচ গেমসের আগের আসরগুলোয় মহিলা কাবাডিতে অন্তত ব্রোঞ্জপদক এলেও এ আসরে পুরুষ কাবাডি দলের ব্যর্থতাকেই অনুসরণ করেন তারা। আগস্টে আয়োজিত আরেকটি আন্তর্জাতিক আসর দ্বিতীয় সামার ইয়ুথ গেমসেও ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।
ভারোত্তোলনঃ
চলতি বছর ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল দেশসেরা ভারোত্তোলক বিদ্যুৎ কুমারের অবসরে যাওয়া। জাতীয় ভারোত্তোলনে টানা ২৫ বারের স্বর্ণপদকজয়ী বিদ্যুৎ ডিসেম্বরে আয়োজিত জাতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় শেষবারের মতো অংশ নেন। তবে নিজের প্রথম আসরের মতো এবারও রৌপ্যপদক জয়েই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানেন এ ভারোত্তোলক।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।