- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- ঝিনাইদহে ৪৬ প্রজাতির পাখির ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে
ঝিনাইদহে ৪৬ প্রজাতির পাখির ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে
ঝিনাইদহে অভয়াশ্রমের অভাব, ফসলে অতিরিক্ত বিষ প্রয়োগ, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া এবং সৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিসহ নানা কারণে ঝিনাইদহ থেকে প্রায় ৪৬ প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হতে চলেছে। যে কারণে পরিবেশের উপর ভয়াবহ প্রভাব এবং ঝিনাইদহ হারাতে বসেছে চিরচেনা পরিচিত পাখির ঐতিহ্য।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলাসহ খুলনা বিভাগে ৬২৪ প্রজাতির দেশীয় পাখির বসবাস রয়েছে। এরমধ্যে ঝিনাইদহ থেকে ৪৬ প্রজাতির পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। যার মধ্যে রয়েছে মহাবিপন্ন ১৫ টি প্রজাতি, বিপন্ন ১৭ টি প্রজাতি, আর প্রজাতি সঙ্কটাপন্ন ৮টি, কম সঙ্কটাপন্ন ৬ টি প্রজাতি। সংরক্ষণের উদ্যোগ ও আইনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা, সচেতনতার অভাব, পাখি শিকারিদের অমানবিকতা, পাখি ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতার কারণে এ সকল পাখি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্যের পাশপাশি ঝিনাইদহ হারাতে চলেছে দেশিয় পাখির বৈচিত্র্য। এরই মধ্যে মহাসংকটাপন্ন পরিচিত কয়েক প্রজাতি পাখি ক্যালেন্ডার বা চিড়িয়াখানায় স্থান করে নিয়েছে। মহাবিপন্ন ১৫ টি প্রজাতি পাখির মধ্যে রয়েছে হরিয়াল, কুড়া, রাজ শকুন, বাঘা বক, কালো তিমির, জলা তিমির, কাঠ ময়ূর, বাদী হাস, বুচা হাস, রাজ ধনেশ, রঙিলা বক, পদ্ম, সাত, ভয়াল, চন্দনা ও কোদালি বক। এ সকল পাখি এক সময় নদী-নালা, খাল-বিলসহ ক্ষেতে খামারে বাড়ির আনাচে-কানাচে দেখা যেত। বিপন্ন ১৭ টি প্রজাতি মধ্যে রয়েছে কালো ঘুন্ড্রি, কাউ ধনেশ, কুঠিয়াল ধনেশ, রাত চড়া, গৈল হাস, হটটিটি, পানি কাটা, গাংচিল, সাদা ঈগল, রাজ গিলা, মদন টাক, কাকাতুয়া, হুতুম পেঁচা, কোকিল। এ পাখির অধিকাংশই গ্রামের বাঁশবাগান ও বন-জঙ্গলে রাতে ডাকাডাকির শব্দ শোনা গেলেও এখন আর তেমন শোনা যায়না। কোকিলের ডাক এখন যেন কবিতা আর গানের ছন্দে স্থান করে নিয়েছে। আর সংকটাপন্ন ৮টি প্রজাতির মধ্যে রয়েছে কাঠঠোকরা, লালা মাছরাঙ্গা, সাপপাখি, ফিঙে, শালিক, চড়াই, শ্যামা ও বাদুর। এ সকল পাখির আবাসস্থল কমে যাওয়ায় বিলুপ্ত হচ্ছে। তবে ১৯৮১ সালের আইনের ব্যাখ্যা করলে সমগ্র বাংলাদেশকেই পাখির অভয়রাণ্য বলা যাই।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যা জীবচক্রকে সঠিকভাবে পরিচালিত করে থাকে। যেমন, পাখি যে পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে, পাখির সংখ্যা যদি কমে যায় তাহলে পোকা-মাকড়ের সংখ্যা বেড়ে যাবে। আর পোকা-মাকড়ের সংখ্যা বেড়ে গেলে, ফসলসহ সবুজ গাছ-গাছালির উপর তাদের তাদের মাত্রা বেড়ে যাবে। আর সবুজ গাছ-গাছালি উপর প্রভাব পড়লে আমাদের উপরও প্রভাব পড়বে। তাই পাখি যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকে আমাদের সকলেই খেয়াল রাখতে হবে। আর আমাদের কৃষি বিভাগ কৃষকদের সচেতন করার জন্য কাজ করছে।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আকরামূল হক জানান, দেশিয় পাখি মুলত কৃষকের বন্ধু। ঝিনাইদহ জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকতা ডা. কানাই লাল স্বর্ণকার জানান, এ সকল পাখি আমাদের উপকার ছাড়া কোন ক্ষতি করেনা। পাখি আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে। পাখির সংখ্যা যেন কমে না যাই সেদিকে সবাই নজর দিতে হবে। আর পাখি যেন বিলুপ্ত না হয়, সে জন্য ঝিনাইদহ প্রাণি সম্পদ নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।