বস্তিতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দিন কাটে অনাহারে-অর্ধাহারে
যে মানুষটি ১৯৭১ সালে দেশ মাতৃকার টানে নিজের মূল্যবান জীবন বাজি রেখে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্ত্র কাঁধে নিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস ধরে পাকসেনাদের সাথে যুদ্ধ করে ছিলেন। স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলেন এবং একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ ও লাল সবুজের পতাকা উপহার দিয়ে ছিলেন। আজ সেই মরহুম মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে ছিন্নমূল হিসেবে চট্রগ্রাম বিভাগের শিতাকুণ্ডস্থ জঙ্গল ছলিমপুরের একটি বস্তিতে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নামে অনেকে বিভিন্ন সুবিদা ভোগ করলেও এক নাম্বার সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা লক্ষীপুর জেলার রাজিবপুর গ্রামের রোকন আলী মিস্ত্রী বাড়ির রোকন মিস্ত্রীর ছেলে মরহুম আঃ রফিকের পরিবারের কপালে কিছুই জোটে না।
মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আঃ রফিকের স্ত্রী হালিমা জানায়, মরহুম আঃ রফিক ২৬ নং বেলী রোডে মাদানী ভবনে(বর্তমানে অফিসার্স ক্লাব) বাবুর্চ্চির কাজ করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পালিয়ে ভারত গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে মহান মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সিলেট ও চট্রগ্রাম এলাকার বিভিন্ন স্থানে সাথে যুদ্ধ করেন।
স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৩ বছর পার হলেও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন সাহায্য সহযোগিতা পাননি তাদের পরিবার। দেশ স্বাধীনের পর একটি চাকরির জন্য অনেকের কাছে গিয়ে ছিলেন কিন্তু কোন কাজ না পেয়ে অফিসার্স ক্লাবের সামনে ইট ভাঙ্গার কাজ করতের, এমনকি বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি করে দু-বেলা আহার জোটেনি তার।
২০০১ সালে মৃত্যু হলে তাকে আবদুল্লাহপুর রেইল লাইনের কাছে দাফন করা হয়। মরহুম আঃ রফিকের স্ত্রী হালিমার দুই ছেলের মধ্যে পুঙ্গ এক ছেলেকে নিয়ে বস্তিতে মানবেতর জীবন জাপন করছেন। ২৫ বছর বয়সি আরেক ছেলে ভাড়ায় ছালিত রিক্সা চালানোর আয় দিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে তাদের দিন কাটে । দুঃখের বিষয় আঃ রফিকের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি রেজিস্ট্রারে স্থান পায়নি। স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তালিকায় নাম উঠানোর জন্য আঃ রফিক মৃত্যুর পূর্বে অজ্ঞাত ব্যক্তির নিকট দিয়ে যান। হালিমা শুধু জানে তার স্বামীর কালুরঘাটের মুক্তিযোদ্ধর ক্রমিক নং ১০০৪, এটাই তার একমাত্র সম্বল।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।