চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা প্রশাসন যখন চাঁদাবাজ!
মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে ব্যাপক চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতদিন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন ক্লাব, রাজনৈতিক দল এবং ব্যাক্তি পর্যায়ে চাঁদাবাজি চললেও এবার খোদ জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা নূরুল হাফিজ তার কার্যালয়ে কর্মরত লোকজনের মাধ্যমে চাঁদা আদায়ে মাঠে নেমেছেন। প্রসাশনের এহেন চাঁদাবাজি আগেকার সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। মহান বিজয় দিবসের নামে চাঁদাবাজীর কারনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জীবননগর ব্যবসায়ী মহল।
অভিযোগে জানা যায়, জীবননগর উপজেলায় অবস্থিত সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক, বীমা, এনজিও, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সার ব্যবসায়ী ও ইট ভাটা মালিক সমিতি, রাইচ মিল মালিক সমিতি এবং বাজারের ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গণহারে চাঁদা উঠানো হচ্ছে। এমনকি অবৈধ যানবাহন আলমসাধু, নসিমন, করিমন চালকরাও চাঁদার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
গণ চাঁদাবাজীর বিষয়ে উপজেলা রাইচ মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলী আহম্মেদ ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের কাছেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁদা চাওয়া হয়েছে। বাজারের সার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী হাফিজুর রহমান হাফিজের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন,তাদের চাঁদার দাবির পরিমাণ অনেক বেশি। তবে আমি ১০ হাজার টাকার বেশি দিতে পারবো না বলে তাদেরকে জানিয়েছি।
অন্যদিকে অবৈধ যানবাহন নসিমন, করিমন ও আলমসাধু চালক জালাল ও জসিম এবং আতিক অভিযোগ করে বলেন,পুলিশ আমাদের গাড়ি আটকিয়ে বলে যে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল হাফিজের কার্যালয়ে গিয়ে টাকা দিয়ে স্লিপ নিয়ে এলেই গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে। আমরা সেখানে গিয়ে ৭শ’ টাকা জমা দিয়ে একটি স্লিপ নিই। ওটা থানায় জমা দিলে আমাদের গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয় জীবননগর দৌলৎগঞ্জ বাজার কমিটির আহবায়ক দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি এম.আর.বাবু বাজারে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের নামে চাঁদাবাজীর কথা স্বীকার করেন।
চাঁদার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী মানিক আকবরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,“যে কোন দিবসের কথা বলে অর্থ তোলা মানেই চাঁদাবাজের সামিল। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি”।
স্লিপ নিয়ে অবৈধ নসিমন, করিমন ও আলমসাধু ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জীবননগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, অবৈধ যানবাহন আটকের পর উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জরিমানা করে। জরিমানার পর আমাদের ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে আমরা ছেড়ে দিই।
বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে তার নের্তৃত্বে গণ চাঁদাবাজীর বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল হাফিজ বলেন, এই চাঁদাবাজী জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইনসহ সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা করছেন। এ কারনে আমরাও চাঁদা নিচ্ছি। এটা দোষের কি আছে?
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।