তালায় বহু বিবাহের হোতা হাবিবুরের বিরুদ্ধে মামলা
সাতক্ষীরার তালার মদনপুর গ্রামের বহু বিবাহের হোতা হাকিম মাহমুদের ছেলে লম্পট হাবিবুর রহমান একাধিক বিবাহের পরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার বিবাহিত স্ত্রীরা আদালতে মামলা করেও রেহায় পাচ্ছে না। এসব কুকর্মের বিরুদ্ধে এলাকায় মুখ খুলতেও সাহস পায় না। নির্যাতন করলে প্রথম স্ত্রী তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি, চলে যেতে হয়েছে তাকেও অবশেষে তৃতীয় স্ত্রীর উপরও নির্যাতন চালালে নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
এলাকাবাসী ও একাধিক সুত্রে জানা গেছে, তালার মদনপুর গ্রামের হাকিম মাহমুদের ছেলে হাবিবুর রহমান(৩৭)। নিজে অনার্স মাস্টার্স পাশ না করেও প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারপর বিয়ে অত:পর যৌতুকের জন্য অমানুষিক নির্যাতন তারপর বিবাহ বিচ্ছেদ। এভাবে তিনটি অসহায় মেয়ের জীবন একে একে নষ্ট করেছে হাবিবুর।
জানা যায়, ২০১১ সালে লম্পট হাবিবুর রহমানের প্রতারণার প্রথম শিকার হয় পিরোজপুর জেলার ঝালকাঠি গ্রামের মেয়ে (১৮)। মেয়েটির সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে তুলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তারপর যৌতুকের দাবিতে মেয়েটির উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। হাবিবুরের পরিবারের সদস্যদের সম্মুখে এসব কাণ্ড ঘটালেও পরিবার হাবিবুরের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি। নিরুপায় হয়ে (১৮) তার বাবার বাড়ী ঝালকাঠিতে চলে যায় । এক সময়ে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। ২০১২ সালে হাবিবুরের দ্বিতীয় শিকার হয় সাতক্ষীরার হরিশপুর গ্রামের (২১)। এসব কুকর্মের কথা গোপন করে নিজেকে একজন চাকুরীজীবি পরিচয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় (২১) সাথে। কিছুদিন যেতে না যেতেই রেরিয়ে আসে হাবিবুরের আসল রুপ। তারপর শুরু হয় মারপিট আর নির্যাতন। নিরুপায় হয়ে তার বাবা আদালতে মামলাও করেন। কিন্তু প্রতিকার কিছু হয়নি। এক সময় তার সাথেও বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটে। ২০১৩ সালের ৩ মে লম্পট হাবিবুরের তৃতীয় প্রতারণার শিকার হয় তালার শাহপুর গ্রামের (২১)। তার কুকর্মের কথা গোপন করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিবাহের পর বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে সাথীর উপর নির্যাতন শুরু হয়। (২১) তার গরীব বাবার কাছ থেকে সাধ্যমত টাকা নিয়ে তার স্বামী হাবিবুরকে দেয় কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। বিগত ৫ মাস পূর্বে নতুন ব্যাবসার কথা বলে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সাথীর গরীব বাবা এত টাকা দিতে অস্বীকার করলে শুরু হয় নির্যাতন। (২১)কে মারপিট সহ অমানুষিক নির্যাতন করে তার বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। গত ৬ নভেম্বর তার বাবার বাড়ী শাহপুরে এসে হাবিবুর তাকে বেধড়ক মারপিট করে। পরবর্তীতে সাথীকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবারের লোকজন। নিরুপায় হয়ে তারা সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। অবশেষে তার কয়েকদিন পর (২১) এর বাড়ীতে আদালতের মাধ্যমে তালাকনামা পাঠায় হাবিবুর।
এসব কুকর্মের বিষয়ে হাবিবুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি এসব ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাই না।
এ ব্যাপারে তালা থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, আমি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের বিষয়টি শুনেছি তবে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি অভিযোগ করলে আমি তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। আদালতে একটি মামলা হয়েছে আমি শুনেছি।
অন্যদিকে, পাটকেলঘাটার ডক্টরস ক্লিনিকের কর্তব্যরত নার্সের সাথে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা গেছে। হাবিবুরের এসব কুকর্মের হাত থেকে রেহাই পেতে ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।