- হোম
- >
- ইতিহাস-ঐতিহ্য
- >
- আজ বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ ও বিরামপুর মুক্ত দিবস
আজ বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ ও বিরামপুর মুক্ত দিবস
আজ ৬ ডিসেম্বর দিনাজপুরের ,বীরগঞ্জ, বোচাগঞ্জ ও বিরামপুর মুক্ত দিবস। দিনাজপুরের এই তিনটি অঞ্চল মুক্ত করতে শহীদ হয় অনেক প্রাণ।
বোচাগঞ্জ : ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে শত্রু মুক্ত করেছিলেন বোচাগঞ্জ। এখানে দীর্ঘ ৯ মাসের লড়াই সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী তৎকালীন তাজউদ্দীন সরকারের বিশেষ দূত আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জননেতা মরহুম আবদুর রৌফ চৌধুরী ও বিশিষ্ট রাজনীতিক মাওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ট সহচর মরহুম আনোয়ারুল হক চৌধুরী নবাব।
এ ছাড়া বোচাগঞ্জের ১১৫ জন দামাল ছেলে, আনসার থেকে আগত একজন সহ মোট ১১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে বোচাগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করেন। এতে ধনতলা গ্রামের আবুল বারেক ও এনামুল হক, কাকদুয়ার গ্রামে চিনিরাম দেব শর্ম্মা, বিহাগাঁও গ্রামের কাশেম আলী, রনগাঁও ইউনিয়নের ধনঞ্জয়পুরের গুলিয়া বাংরু, বনকোট চুনিয়াপাড়ার বের্যমোহন রায় মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ১৩ জন মানুষ শহীদ হন।
বীরগঞ্জ : ১৯৭১ সালের এই দিনে বীরগঞ্জও শক্রমুক্ত হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইর পর। মুক্তি বাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা এই লড়াইয়ে অংশ নেন।
পার্শ্ববর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও জেলা ৩ ডিসেম্বর শক্র মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর (পাক বিহার) অভিমুখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। হানাদার বাহিনী বীরগঞ্জ থেকে পিছু হটে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলার সীমান্তে দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কে ভাতগাঁও ব্রীজের পূব প্রান্তে অবস্থান নেয়। এখানে পাকিবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধে ভাতগাঁও ব্রিজের একাংশ ভেঙ্গে যায়। এখানে বেশ কিছু মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যোদ্ধা শহীদ হন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে দিনাজপুর ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন হওয়ায় বীরগঞ্জও এ সেক্টরের আওতাধীন ছিল। লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃতাধীন সেনাবাহিনীর হাবিদার মোস্তাফিজুর রহমান বীরগঞ্জ ও খানসামার যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত ছিলেন।
৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে বীরগঞ্জ শক্র মুক্ত হতে শুরু করে। রাতেই পুরো এলাকা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পুরোপুরি দখল করে নেয়। সকালে বীরগঞ্জের অলিগলিতে পত পত করে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
বিরামপুর : বিরামপুরও শত্রু মুক্ত হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭ নম্বর সেক্টরের তরঙ্গপুর কালিয়াগঞ্জ রণাঙ্গণে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেন।
মুক্তিযোদ্ধারা বিরামপুরকে পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঘোড়াঘাট রেলগুমটি, কেটরা শাল বাগান, ভেলারপাড় ব্রিজ, ডাক বাংলা, পূর্বজগন্নাথপুর মামুনাবাদ বাঙ্কার বসিয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকতেন। পাক সেনারা ৪ ডিসেম্বর পাইলট স্কুলের সামনে ও ঘাটপাড় ব্রিজে প্রচণ্ড শেলিং করে ভাইগড় গ্রাম দিয়ে তীরমনিতে ৪টি শেল নিক্ষেপ করে। লোমহর্ষক এই হামলায় কেটরা হাটে ১৬ মুক্তিযোদ্ধাসহ সাত পাক হানাদার বাহিনী নিহত ও শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।