- হোম
- >
- ইতিহাস-ঐতিহ্য
- >
- আজ ফেনী মুক্ত দিবস
আজ ফেনী মুক্ত দিবস
বাংলাদেশে যেকয়টি জেলা ৬ ডিসেম্বরে হানাদার মুক্ত হয়েছিল, তার মধ্যে ফেনী অন্যতম। আজ ৬ ডিসেম্বর ফেনী মুক্ত দিবস ।
১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখ সমরে পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ফেনীর মাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উডিয়েছিলেন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনীর নৃশংস বর্বরতায় ক্ষত-বিক্ষত ফেনী শহরে স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালিরা বিজয়ের নিশান উড়িয়ে উল্লাস করে স্বজন হারানোর কান্না ভুলে গিয়েছিল। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও ফেনীতে চিহ্নিত আটটি বধ্যভূমি সংরক্ষণে এগিয়ে আসেনি কেউ।
ফেনী অঞ্চলের মুক্তিবাহিনীর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম বীর বিক্রম ভারতের বিলোনীয়া ও তৎসংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১০ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের অভিযান চালিয়ে বিলোনিয়া, পরশুরাম, মুন্সিরহাট, ফুলগাজী হয়ে যুদ্ধ করতে করতে এগোতে থাকলে পর্যুদস্তু হয়ে ফেনীর পাকহানাদার বাহিনীর একটি অংশ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী হয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের রাস্তা ধরে এবং অপর অংশ শুভপুর ব্রিজের ওপর দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) ফেনী মহোকুমা কমান্ডার বর্তমান ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবদীনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দাগনভুইয়া, রাজাপুর, সিন্দুরপুর হয়ে শহরের দিকে এগোতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পাকহানাদাররা ৫ ডিসেম্বর রাতে কুমিল্লার দিকে পালিয়ে যায়। সেসময় ফেনী অবাঙ্গালি মহোকুমার প্রশাসক বেলাল এ. খানও পাকবাহিনীর সঙ্গে চলে যায়।
ফেনী হানাদার মুক্ত হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক ও রেল পথে হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
মুক্তিযুদ্ধে ফেনীর মুন্সীর হাটের মুক্তারবাড়ী ও বন্ধুয়ার প্রতিরোধযুদ্ধ ইতিহাসে সমাদৃত। এ রণাঙ্গনে সম্মুখ যুদ্ধকৌশল বাংলাদেশ, ভারত, ও পাকিস্তানি মিলিটারি একাডেমিগুলোতে পাঠ্যসূচির অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যা এ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের অহংকার ও গর্বের বিষয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা ফেনী সরকারি কলেজ, তৎকালীন সিও অফিসসহ কয়েককটি স্থানে স্বাধীনতাকামী নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছিল। স্বাধীনতার পর জেলার বিভিন্ন স্থানে আটটি বধ্যভূমিতে শহীদদের লাশ শনাক্ত করতে ছুটে বেড়িয়েছিল স্বজনহারারা। মুত্তিযোদ্ধারা জেলায় সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি (বর্তমানে ফেনী কলেজের কলা ভবনের পেছনে) শনাক্ত করলেও আজও তা সংরক্ষণ করা হয়নি। বর্তমানে এখানে প্রতিনিয়ত ফেনী সরকারি কলেজের পয়ঃনিষ্কাশনের বর্জ্য ফেলা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব বলেন, অমর শহীদদের স্মৃতির ভাস্কর হিসেবে শহরের জেল রোডের পাশে বীর শহীদদের নামের তালিকাসম্মিলিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসম্ভ নির্মাণ করা হলেও কয়েক বছরে স্মৃতিস্তম্ভের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অস্পষ্ট হয়ে মুছে গেছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।