- হোম
- >
- ইতিহাস-ঐতিহ্য
- >
- আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস
আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস
আজ ৬ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের এই দিনে পাকাহানাদার মুক্ত হয়েছিল ঝিনাইদহ। উড়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
অসহযোগ প্রস্তুতিপর্ব, প্রতিরোধ, গেরিলা আক্রমণ ও শেষে সম্মুখ সমরে বিজয় অর্জন- ১৯৭১ সালের এই চারটি পর্যায়ের মুক্তিযুদ্ধে ঝিনাইদহের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সম্মুখ যুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি গেরিলা যুদ্ধ ও অভিযান সংগঠিত হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ সালে ঝিনাইদহ পাকহানাদারদের দখলে যায়।
তবে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও বহু মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহের মাটি থেকে পাকহানাদার বাহিনী বিতাড়িত হয়।
যশোর ক্যান্টনমেন্টে জিওসি সবচেয়ে বেশি প্রতিশোধমূলক আক্রমণ চালিয়েছিল ঝিনাইদহে। শহরের দোকানপাট ভস্মীভূত হয়েছিল, ধুলিসাৎ হয়েছিল বাড়িঘর। সংঘঠিত হয়েছিল একাধিক যুদ্ধ।
২৮ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ও ব্যারিস্টার আহমেদুল ইসলাম ছদ্মবেশ নিয়ে ঝিনাইদহে রাত্রী যাপন করেন। ১ এপ্রিল ১৯৭১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী কামান ও মেশিনগানে সজ্জিত হয়ে একটি সশস্ত্র সেনাবহর বিষয়খালীর কাছে বেগবতী নদীর তীরে পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ বিজয়ের গৌরবে প্রথম মাইল ফলক স্থাপন করে বিষয়খালী যুদ্ধে। ১৬ এপ্রিল হানাদার বাহিনী আবারও বিষয়খালী বেগবতী নদীর তীরে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বাধার সম্মুখীন হয়। এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে ৩৫ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ব্রিজের পাশেই তাদের গণকবর দেওয়া হয়। এরপর থেকে জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ। বিভিন্ন স্থানে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়।
এরপর ৪ আগস্ট আলফাপুরের যুদ্ধ, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধ, ২৭ নভেম্বর কামান্নার ট্রাজেডিসহ বেশ কয়েকটি গেরিলা যুদ্ধ সংগঠিত হয়। কামান্নায় ২৭ নভেম্বর পাকহানাদাররা ২৭ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। ১৪ অক্টোবর আবাইপুরের যুদ্ধে ৪১ মুক্তিযোদ্ধা, আলফাপুরের যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর দুই ক্যাপ্টেন, তিন সিপাহিসহ চার রাজাকার নিহত হয়। ঝিনাইদহ জেলায় ২৭৬ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। কিন্তু খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে এই জেলায় মাত্র দুজন। তারা হলেন বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম। এ ছাড়া ঝিনাইদহের অন্যতম আবাইপুর যুদ্ধের একাধিক গণকবর আজও অরক্ষিত।
বিজয় শুধু আনন্দ নিয়েই আসে না। আনে স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েও। আর তাই গণহত্যাসহ অসংখ্য নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনার কথা স্মরণ করে শহীদের স্বজনেরা চোখের জল মোছেন। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলার দাবি তাদের।
আজ বাংলাদেশে লাল-সবুজের যে পতাকা পতপত করে উড়ছে, সেই পতাকা ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহে ওড়ানো হয়েছিল। যশোরের সঙ্গে একই দিন শত্রু মুক্ত হয় ঝিনাইদহ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।