বিএনপি নেতাদের মানসিক সুস্থতা পরীক্ষা করুন: হাছান মাহমুদ
বিএনপি নেতাদের মানসিক সুস্থতা পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি আজ সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের অশোভন ও আপত্তিকর মন্তব্য করার প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান।
ড. হাছান বলেন, ‘ বিএনপি নেতাদের বলব আপনাদের কথা ডিমেনশিয়া রোগাক্রান্ত অর্বাচীন বুড়োর মতো। ড্যাব নেতাদের বলবো আপনাদের নেতাদের মানসিক সুস্থ্যতা পরীক্ষা করুন।’
তিনি বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় সত্য কথা বলেছেন বলেই বিএনপি নেতাদের আঁতে ঘা লেগেছে। সজিব ওয়াজেদ জয় পৃথিবীর অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভাড থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। যা দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
তিনি বলেন, জয় যখন কথা বলেন তখন প্রমাণ ও যুক্তি সহকারে কথা বলেন। তিনি সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।
আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাব্লু, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুস সাত্তার, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
হাছান বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন নয়, তা বাস্তব সত্য। এই ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই প্রথম এসেছে।
বিএনপির নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা দয়া করে অশোভন ও অসংলগ্ন কথা না বলে বরং আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন। মিথ্যাচার আর গলাবাজী দিয়ে আপনারা আপনাদের অপকর্ম কখনও ঢাকতে পারবেন না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে জিয়াউর রহমান প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের চর হিসেবে কাজ করেছেন। এ ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী ব্রিগেডিয়ার বেগের জিয়াউর রহমানের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁর কাছে লেখা চিঠিই অকাঠ্য প্রমাণ।
ইংরেজীতে লেখা জিয়াউর রহমানকে লেখা চিঠির প্রদর্শন করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের গুপ্তচর ছিলেন বলেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। সে কারনেই খন্দকার মোশতাক রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার পর জিয়াকেই সেনাবাহিনীর প্রধান করেছিলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ৩ নভেম্বর জেলহত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। জেলহত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২ টার পর। সেজন্য ৩ নভেম্বরকে জেল হত্যা দিবস বলা হয়। তখন জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হিসেবে হত্যাকারীদের সহায়তা করেন।
তিনি বলেন, এমনকি ৩ নভেম্বর সকাল বেলা জেল হত্যাকারীদের ব্যাংককে পালিয়ে যাওয়ার সকল বন্দোবস্ত করেন জিয়াউর রহমান। তাকে এ কাজে সহায়তা করেন বিএনপির বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শমশের মুবিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, জেলহত্যার মতো নৃশংস ঘটনার পর ৩ নভেম্বর দুপুর দু’টার দিকে সেনা সদস্যরা খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে বিদ্রোহ করে। সেনা সদস্যদের হাতে জিয়াউর রহমান অন্তরীন হন ৩ নভেম্বর রাত ৯ টার দিকে।
হাছান বলেন, তাই বিএনপির নেতারা যা বলার চেষ্টা করেন জিয়াউর রহমান ৩ নভেম্বর জেলহত্যাকাণ্ডের সময় অন্তরীন ছিলেন তা ঘৃন্য মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমানই জেলহত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশিলব।
তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর বহু সেনা সদস্যকে হত্যা করে তাদের রক্তের ওপর দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখলের পর ১১ হাজার যুদ্ধাপরাধীকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা কারী শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। যুদ্ধাপরাধী আব্দুল আলীমকে উপদেষ্টা বানিয়েছিলেন এবং যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমকে দেশে ফেরত এনেছিলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধান সংশোধন করে যুদ্ধাপরাধীদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। সেজন্য একাত্তরে পাকিস্তানীদের গুপ্তচরের ভূমিকা পালনকারী জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং ৩ নভেম্বর চারনেতার হত্যার প্রধান কুশিলব। সেজন্য কোনভাবেই তাকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যায়না।
তিনি বলেন, আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামাতে ইসলামীর সাথে শুধু জোট গঠন নয় তাদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়ীতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছেন বিএনপি।
তিনি আরো বলেন, যে দল সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরী, আব্দুল আলীম, মুজাহীদ ও নিজামীদের মতো দন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীসহ হাজার হাজার রাজাকার আলবদর, রাজাকারদের আবাসস্থল সেই দলকে রাজাকারের দলই বলতে হবে। সজীব ওয়াজেদ জয় এ সত্য কথাটাই বলেছেন।
ড. হাছান বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে(২৬ মার্চ) বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষনার পর তদানীন্তন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করেছিলেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিবসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অন্ত:স্বত্তা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। অন্তরীন অবস্থায় সজীব ওয়াজেদ জয় জম্মগ্রহন করেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ন্যাক্কারজনকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বন্দীদশাকেও উপহাস করেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বেচ্ছায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর অথিতিয়তা গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যে পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তার আথিয়েতায় ছিলেন সে সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর পর সকল প্রটোকল ভেঙ্গে তার পাঠানো শোকবার্তা জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।