নগদ ২ লাখ টাকা এবং একটি মোটরসাইকেলের দাবিতে ৪ মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা এক গৃহবধুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে পাষণ্ড স্বামী। গুরুতর আহত ও অচেতন অবস্থায় স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান এবং পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিন্টু তার ফোর্স নিয়ে শনিবার সন্ধায় হাফিজা ইয়াসমিন রুজিকে(৩০) উদ্ধার করে। পরে তারা তাকে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ ভর্তি করেন। বর্তমানে রুজি হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে ডা. মাইদুল ইসলাম অধিনে চিকিৎসাধিন আছেন। 

পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছরের ২৭ জুন লালমনিরহাটেরর আদিতমারী উপজেলার আদর্শপাড়া এলাকার একরামুল হকের মেয়ে হাফিজা ইয়াসমিন রুজির সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার চন্দনপাট এলাকার মৃত আব্দুল জব্বার( জব্বার ডাক্তার) এর ছেলে বেলাল হোসেনের (৩৮)। বিয়ের সময় কোন যৌতুক দেওয়া নেওয়ার কথা ছিল না। 

আহত রুজি জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসত বেলাল। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার নগদ ২ লাখ টাকা এবং একটি মোটরসাইকেল দাবি করে। এ নিয়ে বেলালের বড় ভাই শরীফ উদ্দিন কথা বলেন আমার বাবা একরামুল হকের সাথে। 

এ সময় বাবা বলেছেন, ঠিক আছে আমরা উভয় পরিবার বসে একটি সিদ্ধান্ত নেব। কিন্তু এ সংবাদ বেলাল হোসেন জানার পর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং শনিবার দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ করে আমাকে বাঁশ দিয়ে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলেও আমাকে উদ্ধার করতে পরেনি। 

স্থানীয়রা জানান, রুজির আত্মচিৎকারে আমরা এগিয়ে এসেও তাকে উদ্ধার করতে পারিনি। পরে বিষয়টি আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুজ্জামানকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এরকিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে রুজিকে উদ্ধার করে হাসপালে ভর্তি করান।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুজ্জামান জানান, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি গিয়ে মেয়েটাকে উদ্ধার করি। পরে পুলিশ আসলে উভয়ে আহত রুজিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

আদিতমারী হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাইদুল ইসলাম জানান, রুজির অবস্থা গুরুতর, তার দু পায়ের হাটুর নিচে এবং উপরে, পিটে, দু হাতসহ শরীর বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত এবং ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। 

তিনি বলেন, রুজি ৪ মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা। তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করার চিন্তা করছি আমরা। ঘটনাস্থলে যাওয়া আদিতমারী থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিন্টু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। 

আদিতমারী থানার অফিসার্স ইনচার্জ কফিল উদ্দিন জানান, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটাকে ভীষণ নির্যাতন করেছে। আমি জানার পর পরই তাকে উদ্ধার এবং অভিযুক্ত বেলালকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে ফোর্স পাঠিয়ে দেই। কিন্তু বেলাল পালিয়েছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। 

অভিযুক্ত বেলাল স্ত্রী হাফিজা ইয়াসমিন রুজিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে বলেন, ভাই ও আমার মাকে খুব নির্যাতন করে। তাই মারধর করেছি।