রাবি শিক্ষক শফিউল হত্যার দায় স্বীকার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহযোগী অধ্যাপক শফিউল ইসলামের হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ‘আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২’ নামের একটি জঙ্গি সংগঠন। এ সংগঠনটি তাদের ফেসবুক পেজে এক বার্তার মাধ্যমে এ দায় স্বীকার করেছে। এতে বলা হয়েছে ইসলামবিরোধী কাজের জন্য তিনি উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছেন।
ক্লাসে মেয়েদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ ও দাঁড়ি-টুপিধারী ব্যক্তিদের বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে না এমন মন্তব্যকে ইসলামবিরোধী বলে দাবি করা হয় ওই পেজে। আর এ কাজের জন্য মৃত্যুই তার উপযুক্ত শাস্তি বলে উল্লেখ করা হয়।
এই জঙ্গি সংগঠনটির ফেজবুক পেজে দেওয়া বার্তাটি সাহস২৪.কম এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
“এ কে এম শফিউল ইসলামের অপরাধ - ১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে দাড়ি কাঁটা ও পাঞ্জাবি-পায়জামা না পরার শর্তের শিক্ষক নিয়োগের পর ছাত্রীদের বোরকা পরে ক্লাস না করার নির্দেশ দিয়েছে বিভাগীয় সভাপতি ড. এ কে এম শফিউল ইসলাম। - দৈনিক সংগ্রাম, শনিবার ০৩ এপ্রিল ২০১০
আজ এই মুরতাদ তার যথাযথ প্রতিদান পেয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।”
ফেসবুক পেজে নিহত ব্লগার রাজীব ও আশরাফুল ইসলামের পর শফিউলের লাল ক্রস চিহ্ন যুক্ত ছবি পোস্ট করা হয়েছে। এছাড়া ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও রাকিব মামুনের ছবি দিয়ে তাদের ওপর আবারো হামলা চালানোর ঘোষনা দিয়েছে।
উল্লেখ, গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে ক্যাম্পাস থেকে রাজশাহীর বিনোদপুরে বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটি (বিহাস) এলাকার নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন ড. শফিউল ইসলাম। বিহাস গেটে পৌঁছালে ওঁত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। তার মাথা, ঘাড় ও পিটে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় তার।গুরুতর আহত অবস্থায় ড. শফিউলকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
শফিউল ইসলামের মৃত্যুর খবরে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সংগঠন হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
শফিউল ইসলামের মৃত্যু শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ রবিবার পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নিহতের জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ড. শফিউলের মরদেহ নিজ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শালমারা ইউনিয়নের হিয়াদপুর গ্রামের নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে জনপ্রিয় এ শিক্ষককে।
মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, কে বা কারা তার ওপর হামলা চালিয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটকের খবরও পাওয়া যায়নি। তবে জড়িদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চলছে বলে জানান তিনি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।