ঝালকাঠিতে নগ্নছবি ও মোবাইলে ভিডিও প্রদর্শন
ঝালকাঠিতে বিভিন্ন রোগাক্রান্ত যৌনাঙ্গের নগ্নছবি ও মোবাইলে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে চলছে কথিত যৌনশক্তি বর্ধনের বোনাজি সালসা ও বড়ি’র রমরমা বাণিজ্য। শহরের গুরুত্বপূর্ণ লোকালয় বারচালা কেন্দ্রিক একদল দালালের আশ্রয়ে প্রকাশ্যে পর্নোগ্রাফি দেখিয়ে বিভিন্ন বয়সী পথচারীদের আকৃষ্ট করে বিক্রি করছে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুকিপূর্ণ এ যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির ওষুধ। মটরসাইকেলে দিনভর জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে আর রাতে শহরের প্রাণকেন্দ্র বারচালার সম্মুখে চলে এ রহস্য জনক ওষুধের বাণিজ্য। অভিযোগ রয়েছে এ যৌন শক্তির ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছে স্থানীয় সচেতন কেউ প্রশ্ন করলেও এগিয়ে এসে উত্তর দেয় আশ্রয়দাতা অর্থলোভী দালালরা আর পুলিশ বা প্রশাসনের কেউ আসলে তারাই ম্যানেজ করে।
সরেজমিন ঝালকাঠি শহরের প্রাণ কেন্দ্র বারচালা চত্বরে সপ্তাহে ৩ দিন সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মোটর সাইকেল উপরে রেখে বিভিন্ন ভূইফোর কোম্পানির মোড়কে ঢাকা এসব যৌনশক্তি বর্ধনের ও যৌন রোগ নিরাময়ের ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন ধরণের কথার ফুলঝুরি ও কুরুচিপূর্ণ ছবি-ভিডিও দেখিয়ে কিশোর, তরুণ, যুবক থেকে বৃদ্ধবয়সী মানুষের মাঝে চলে এ গোপন রোগের চিকিৎসা বাণিজ্য। অল্প ও অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত ও সাধারণ শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের কথা-ছলাকলার মাধ্যমে আকৃষ্ট করে কোম্পানি নির্ধারিত মূল্য থেকে অর্ধেক অথবা তিন ভাগের এক ভাগ মূল্যে বিক্রয় করে এ সকল যৌনরোগের ঔষধ।
এ বাণিজ্য চলাকালীন গালুয়া দুর্গাপুর গ্রামের বাশার তালুকদারের পুত্র পরিচয় দানকারী কথিত চিকিৎসক পান্না তালুকদার (৩৫) এর সাথে আলাপকালে ‘তার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয় জানতে চাইলে’ বলেন, ৪ নং গালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করছেন বলে জানান। কোন সালে জানতে চাইলে ‘তার মনে নেই তবে একটা সালে লিখে দিলেই হবে’ বলে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করা যায় কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘তাদের সময় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই এসএসসি পাশ ছিল।
ঔষধের বিষয় জানতে চাইলে বলেন, ‘বেদনায় তেমন কাজ না করলেও যৌন রোগের কাজ করে কারেন্টের মতো। তার ওষুধ খাওয়ার ১ ঘণ্টা পরেই টের পাবে যৌবন কাকে বলে’। বিভিন্ন ধরণের পর্ণ ছবি ও মোবাইলে ভিডিও দেখানো বিষয় জানতে চাইলে বলেন, ব্যবসার প্রচার এটা দেখানোর নিয়ম আছে। এ সব আলোচনার মধ্যেই বারচালার আশপাশ থেকে বেড়িয়ে আসে আশ্রয়দাতা দালালরা। এসে দ্রুত পর্নোছবি ও ভিডিওবাহী মোবাইল সেটটি সরিয়ে ফেলতে দেওয়া হয় তার কাছে। এক পর্যায় দালালরা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। আশ্রয়দাতা দালালরা এ ফুটপাত ঔষধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন।
এছাড়াও বেশ কয়েকজন পথচারীর সাথে আলাপকালে জানায়, এসব মহাঔষধ বিক্রির নামে পর্নোছবি প্রদর্শন ও হাত মাইক ব্যবহার করে অশ্লীল ভাষা খিস্তিখেউরি করণে জনবহুল এই সড়কটি দিয়ে কোন সাধারণ মহিলা বা ভদ্রলোকের চলাচল করাও অসম্মান জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর গোপন রোগের চিকিৎসার নামে প্রকাশ্য রাস্তায় এ অশ্লীলতা রোধে পুলিশ বা প্রশাসনের উদাসীনতা ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বহীনতার কারণে সাধারণ মানুষ ঝামেলার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মানষ কৃষ্ণ কুণ্ড বলেন, এসকল ঔষধে কোন রোগ ভালো হয় না। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়ে জীবনে মারাত্মক ঝুঁকি আসতে পারে। ফুটপাতে বিক্রির এসকল ঔষধেই যদি কাজ হতো তাহলে সরকার আমাদের মত চিকিৎসকদের হাজার হাজার টাকা বেতন দিয়ে রাখতেন না।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।