বাংলাদেশ এ্যাপেকের সদস্য হতে আগ্রহী : রাষ্ট্রপতি
এ্যাপেকের সদস্য হতে বাংলাদেশের গভীর আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন সদস্যভুক্তির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়ার বিষয়টি এ্যাপেক বিবেচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
আজ বেইজিংয়ে এ্যাপেক সিইও শীর্ষ সম্মেলনের এক অধিবেশনে ভাষণে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ্যাপেকের সদস্য হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নতুন সদস্য নেয়ার ওপর থেকে এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এ্যাপেক) তার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ অধিবেশন সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের নির্বাহী সচিব ড. শামশাদ আক্তার। এতে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ থেইন সেইন, লাও পিডিআর’র প্রেসিডেন্ট চোমালি সায়াসোন, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামডি আক্কা মোহা সেনা পাদেই টিহো হুন সেন এবং বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সিইও’রা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার বাংলাদেশের মতো নন-এ্যাপেক ও এ্যাপেক সদস্য দেশগুলোর টেকসই অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত ‘ফ্রি ট্রেড এরিয়া অব দ্যা এশিয়া প্যাসিফিক (এফটিএএপি)’ এর ফলে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের সৃষ্টি হবে, যা এ অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী।
আবদুল হামিদ বলেন, সার্ক ও বিমস্টেক-এর আওতায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর অবকাঠামো ও অর্থনীতি যোগাযোগের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, এর আওতায় বর্তমানে বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর (বিসিআইএম-ইসি) প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান ওশেন রিম এসোসিয়েশনে (আইওআরএ) সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আইওআরএ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া সমুদ্র বিষয়ক খাতে এ অঞ্চলের ভারত, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, ইউএই ও জাপানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যের স্থান হিসেবে আবির্ভূত হতে আমরা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর এবং দক্ষিণাঞ্চলে তৃতীয় সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। বিশ্বের এ অঞ্চলে সিল্ক রোড ইকনোমিক বেল্ট এবং একুশ শতকের মেরিটাইম সিল্ক রুট পুনরুজ্জীবনে চীনের প্রেসিডেন্ট ঝি জিমপিং যে উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ তার প্রশংসা করছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়া এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমান যোগাযোগ স্থল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে দেশের মধ্যাঞ্চলে বিশ্বমানের একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণেরও পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আবদুল হামিদ বলেন, স্থায়ী বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে একটি কার্যকর মৌলিক সংস্কার অপরিহার্য। এ জন্য জোরালো রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশ এ ধরনের প্রক্রিয়ায় এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে অংশ নিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ষিক জিডিপি ৬ শতাংশের উপরে বজায় রেখেছে। এখানে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বিপুল পরিশ্রমী তরুণ ও সহজলভ্য শ্রমশক্তিসহ সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের জন্য উদার পরিবেশ বিরাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, জিডিপি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দিক থেকে বাংলাদেশ বর্তমানে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের প্রথম ৪৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।