নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র এখন অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। সেই সাথে এ নদের পূর্ব চ্যানেল জিগাবাড়ি থেকে মইনারচর এবং পশ্চিম  চ্যানেল কামারজানি নৌবন্দর থেকে জামিরা পর্যন্ত দীর্ঘ ৫০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছোট-বড় দুই শতাধিক চর ও ডুবোচর জেগে  উঠেছে। 

এছাড়াও তিস্তামুখ ও বালাসীঘাট থেকে বিভিন্ন আন্তঃজেলা ও আন্তঃ ইউনিয়ন নৌরুটে নৌকা পারাপার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।  নদীর বুকে জেগে ওঠা বালুচরে কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ শুরু করেছেন। এ সময়ের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি  বর্তমানে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে। আগে কখনোই এই মৌসুমে এভাবে এ নদের পানি শুকিয়ে যায়নি। এর দরুন নৌ-চলাচল  রুটগুলোতে জমেছে বড় ধরনের বালুর স্তর। প্রায় একই অবস্থা যমুনা নদীতে। কার্তিক মাসেই ব্রহ্মপুত্র নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে  জেগেছে ছোট-বড় অসংখ্য চর। বিশাল এলাকাজুড়ে চর দেখে মনেই হয় না এখানে এক সময় উত্তাল স্রোতস্বিনী ব্রহ্মপুত্র নদ ছিল।  ব্রহ্মপুত্র নদের কালাসোনা টার্নিং পয়েন্ট নৌ চ্যানেল ভরাট হয়ে পড়েছে। নদের পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাইবান্ধার ফুলছড়ি  উপজেলার প্রায় ১৮টি নৌঘাট অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। 

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব চ্যানেল জিগাবাড়ি থেকে মইনারচর এবং পশ্চিম চ্যানেল কামারজানি নৌ বন্দর থেকে জামিরা পর্যন্ত  দীর্ঘ প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় ছোট-বড় দুই শতাধিক চর ও ডুবোচর জেগে ওঠায় ফুলছড়ি উপজেলার অভ্যন্তরীণ  নৌ-রুটগুলো অচল হতে চলেছে। এর মধ্যে ফুলছড়ি-বালাসী, গজারিয়া-গলনা, সিংড়িয়া-ঝানঝাইর, গুনভরি-কালাসোনা এবং  আন্তঃজেলা নৌ-রুট ফুলছড়িঘাট-গুঠাইল, সৈয়দপুর-রাজিবপুর, তিস্তামুখঘাট-আমতলী এবং তিস্তামুখঘাট-সারিয়াকান্দিসহ ছোট-বড়  আরো ১৫টি নৌ-রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচলে চরম বিঘ্নের সৃষ্টি হয়েছে। 

ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, নদীগুলোর নাব্যতা সংকটের কারণে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বর্ষা  এলেই নদীর দুই কুল উপচে যেমন বৃহত্তর রংপুরের জেলাগুলো ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়, তেমনি নদীর কুলগুলো অব্যাহত পানির  চাপে মারাত্মক ভাঙ্গনেরও সম্মুখীন হয়। ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার পরিবার গৃহহারা হয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে।