আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় অবিলম্বে কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণে সাংবিধানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন,‘দেশের যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ একটি বিশেষ আদালত,সারা বিশ্বের জন্য যা একটি মডেল বলে স্বীকৃত হতে পারে। তাই বিশ্বের কোথাও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্তদের আপিলের সুযোগ না থাকলেও বাংলাদেশে সেই বিধান রাখা হয়েছে। তবে, সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগের রায় রিভিউয়ের কোন সুযোগ নাই।’

তিনি আরো বলেন,’ আমি আহবান জানাবো- আইন বিভাগ এবং সরকারের নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জেলগেটে দ্রুত রায়টি পৌঁছানোর উদ্যোগ নেবেন এবং রায় সাংবিধানিক বিধিবিধানের মাধ্যমে কার্যকর করা হবে।’

সুরঞ্জিত আজ দুপুরে কাকরাইলের বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে নৌকা সমর্থকগোষ্ঠী আয়োজিত“ সমকালীন রাজনীতি” বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।

কামারুজ্জামানের রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে জাতীয় সংসদের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন,’রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আগে আমি বলব, অপরাধী কি তার দোষ স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে ? নিহতদের পরিবার-পরিজনের কাছে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে ? ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে কাদের মোল্লা কি ক্ষমা চেয়েছিল ?’ 

জামায়াত একাত্তরে মানবতাবিরোধী হত্যা, লুন্ঠন,ধর্ষণ বা অগ্নিসংযোগের মত গর্হিত অপরাধের জন্য কোনদিন ক্ষমা প্রার্থনা করেছে কীনা- তিনি জানতে চেয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন।

তিনি জেলগেটে দাঁড়িয়ে মিডিয়ায় কামারুজ্জামানের বড় ছেলের ’তার বাবা নির্দোষ’ বলে সাফাই গাওয়াকে ধৃষ্টতা এবং দফায় দফায় কনডেম সেলের আসামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আইনজীবীদের রিভিউ তত্ত্ব, ক্ষমা তত্ত্বসহ বিভিন্ন বক্তব্য প্রচারকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা বলে জানান। 

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য সতিশ চন্দ্র রায়,শিরীন শারমিন পুনম এমপি,সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার বক্তৃতায় লন্ডনে বসে তারেক রহমানের বিভিন্ন বক্তব্যের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে একে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে মন্তব্য করেন। 

তিনি বলেন,’ দেশের জনগণ এখন অনেক সচেতন, তারা অনেক কিছুই জানে এবং বোঝে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায়ে বেগম জিয়ার চুপ মেরে যাওয়া, বেগম জিয়ার পুত্র তারেকের লন্ডনে ইতিহাস বিকৃতির স্কুল খুলে দেশবাসীর সেন্টিমেন্টবিরোধী একের পর এক কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য-এসব করে বিএনপি দিন দিন আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।’

তারেক এখন জামায়াতের মতই বিএনপি’র আরেকটি বোঝা বলেও তিনি উল্লেখ করেন।