আজ ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যার পর শুরু হওয়া নানা উত্থান-পতনের একপর্যায়ের সমাপ্তি ঘটে এই দিনে। রক্তাক্ত অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে এই দিনে তৎকালীন সেনা উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা সংহত করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির আপাতত অবসান ঘটান। বিএনপি দিনটিকে 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' হিসেবে পালন করলেও জাসদ 'সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস' হিসেবে পালন করে। এ ছাড়া কয়েকটি সংগঠন 'মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস' হিসেবে দিনটি পালন করে থাকে। এ বছর দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিএনপির দৃষ্টিতে ১৯৭৫ সালের এই দিনে জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে সিপাহি-জনতা আধিপত্যবাদী শক্তির নীলনকশা প্রতিহত করে দেয়। এভাবে তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছিল। জাসদসহ সমমনা সংগঠনগুলোর মতে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে ক্ষমতালিপ্সু অফিসারদের ক্ষমতা দখল-পুনর্দখলের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের 

প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের এই দিনে 'সিপাহি-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থান' ঘটেছিল।

বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে নানা ঘটনার ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান ঘটে। গত ৩৬ বছরে অধিকাংশ সময় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস সরকারিভাবে পালিত হয়েছে। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত দিবসটিতে সরকারি ছুটি ছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ ছুটি বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে ছুটি পুনর্বহাল করে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে ছুটি আবার বাতিল করে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সে সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি :দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি দিনটিতে ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে। সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন নেতাকর্মীরা। আগামীকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। অনুরূপভাবে সারাদেশে দলের সব ইউনিট কমিটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করবে।

জাসদ দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় ৩৬ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করবে। বেলা ১১টায় একই স্থানে সমাবেশ ও কালো পতাকা নিয়ে শোক মিছিল করবে 'আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান' সংগঠন।