কোন পথে হাঁটবে জামায়াত ?
বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত কয়েকদিনে জামায়াতে আমীরসহ তিনজন শীর্ষপর্যায়ের নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে দলটি মোট চার দিন হরতাল পালনের পর আবারো হরতাল ডাকার চিন্তা করছে। দু'দফায় ডাকা পাঁচ দিনের হরতালের আজ শেষ হয়েছে।
দলটির দ্বিতীয় সারির যে নেতারা এখন জামায়াতের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা বলছেন, সরকার যদি মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়ের কার্যকর করার ব্যাপারে চূড়ান্ত উদ্যোগ নেয়, তাহলে আবারও হরতাল ডাকা হতে পারে।
কিন্তু জামায়াতের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকেই হরতালের বিকল্প কোন কর্মসূচি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের জন্য জামায়াত শক্ত কোন প্রতিবাদ করতে না পারলে, সেটা তাদের মাঠপর্যায়ে হতাশা বাড়িয়ে দেবে ভেবেই দলটি টানা হরতালের কর্মসূচি নিয়েছিল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গ্রেফতার থাকা জামায়াতের শীর্ষপর্যায়ের নেতাদের মধ্যে প্রথম আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে।
এখন দলটির আরেকজন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় এসেছে সর্বোচ্চ আদালত থেকে। সেই রায় কার্যকর করার প্রশ্ন এখন সামনে আসছে।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করার বা আইনগত সব সুযোগ নেয়ার চেষ্টা তারা করবেন। তবে, সরকার রায় কার্যকর করার চেষ্টা করলে তারা হরতালের মতো কর্মসূচি নেবেন।
গত সপ্তাহে জামায়াতে আমীর মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ফাসির রায় হয় ট্রাইবুনাল থেকে। প্রতিবাদে দলটি তিন দিন হরতাল ডেকেছিল। এরইমধ্যে ট্রাইবুনাল থেকে মীর কাশেম আলীর ফাঁসির রায় এবং মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির চূড়ান্ত রায় আসে আপিল বিভাগ থেকে। তখন জামায়াত আরও দু’দিন হরতাল ডাকে। এবার ৫ দিনের এই হরতালে ঢাকাসহ সারাদেশে সেভাবে সাড়া মেলেনি।
দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর বলেছেন, “হরতাল কর্মসূচি বেশি প্রয়োগের পরিস্থিতি নেই। কারণ এতে মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠে যায়। এছাড়া হরতালের মতো কর্মসূচি অব্যাহত রাখলে দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আবারও ধরপাকড়ের মুখে পড়তে হতে পারে। এই বিষয়গুলোও জামায়াত নেতৃত্ব এখন বিবেচনায় নিচ্ছে”। এখন হরতালে সেভাবে সাড়া যে মিলছে না। সেটা জামায়াতের মাঠপর্যায়ের মূল্যায়নেও উঠে আসছে।
দলটির শক্ত অবস্থান রয়েছে এমন কয়েকটি এলাকা যেমন রাজশাহী, বগুড়া এবং গাইবান্ধায় জামায়াতের কয়েকজন নেতার সাথে কথা হয়। তারা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, হরতালের বিকল্প কর্মসূচি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা থেকে জামায়াতের নেতা আজিজুর রহমান বলেছেন, “ঘন ঘন হরতাল না দিয়ে গণসংযোগের কর্মসূচি দিতে হবে। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে বলেছি, আমাদের বক্তব্য যেন মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারি। সে ধরনের কর্মসূচি নেওয়া উচিত”।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্য বলেছেন, তারা দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কর্মসূচি নিচ্ছেন এবং সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।