থমকে আছে রাবার ড্যাম প্রকল্পের কাজ
কুড়িগ্রামের জিঞ্জিরাম নদীর ওপর নির্মাণাধীন রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতায় মাঝ পথে এসে আটকে আছে। সেই সাথে থমকে আছে জিঞ্জিরাম নদীর দুপাড়ের কৃষকের ভাগ্যের চাকা। বহু প্রত্যাশিত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে সীমান্ত লাগোয়া রৌমারী উপজেলার মানুষের জীবন যাত্রা। উন্নয়ন হবে কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার, বদলে যাবে এ এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থাও।
রাবার ড্যাম বাস্তবায়নকারী সংস্থার তথ্যানুযায়ী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সেচ সুবিধায় আসবে ঐ এলাকার ১৭ হাজার সদস্যের প্রায় ১০হাজার হেক্টর জমি। ফলে অল্প খরচে সহজ সেচ ব্যবস্থায় উৎপাদন ব্যায় নেমে আসবে প্রায় অর্ধেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলার যাদুর চর ইউনিয়নের লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামে জিঞ্জিরাম নদীর উপর প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে ২০১০ সালে রাবার ড্যামের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ানে ক্ষুদ্র ও মাঝারী নদীতে রাবারড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে।
কিন্তু অতি মুনাফা লাভের আশায় দুই দফায় সময় নিয়েও খন্দকার বিজনেস ইন্টারন্যাশনাল নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ করতে পারেনি।
ইতোমধ্যে প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থের ৬০শতাংশ তুলে নিয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থার অসহযোগীতার অজুহাতে কাজ বন্ধ রেখে সটকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। উপরন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি প্রাক্কলন ব্যায় বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছে। এতে করে দুপক্ষ্যের দ্বন্ধের কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাবার ড্যাম প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ।
এলাকাবাসী জানায়, রাবার ড্যামের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করে তা কৃষি কাজে ব্যাবহারের লক্ষ্যে এ প্রকল্পটির মুল উদ্দেশ্য হলেও জিঞ্জিরাম নদীর দুপাড়ের মানুষের যাতায়ত ব্যবস্থারও প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে। নির্মাণকাজ বিলম্বিত হওয়ায় আমরা কৃষি উপর নির্ভরশীল সীমান্ত লাগোয়া এই জনপদের মানুষজন হতাশ হয়ে পড়েছি ।
খন্দকার বিজনেস ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধীকারী আলহাজ্ব সাইফুজ্জামান জানান, রাবার ড্যাম প্রকল্প এলাকাটি দুর্গম এলাকায় হওয়ায় এবং মালামাল পরিবহনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় কাজে বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার অসহযোগীতার কারণে সময়মত কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কুড়িগ্রাম এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নবীউল ইসলাম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অসহযোগীতার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মুলত অনুন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা এবং বন্যার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়েছে। তবে আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত হবে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ রুহুল আমিন জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা (স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর) দুপক্ষের মধ্যে সমন্বয়ন সাধন করে দ্রুত রাবারড্যাম প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু তারা দু’পক্ষই গড়িমসি করছে। বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি।
রাবারড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের কৃষি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে এমনটাই আশা করছেন জন প্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।