জঙ্গিদের ধরিয়ে দিতে ভারতের পুরষ্কার ঘোষণা
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ১২ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে ভারতীয় জাতীয় তদন্ত সংস্থা-এনআইএ।
বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা এনআই শুক্রবার ১২ জনের তথ্য পেতে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে ওয়েবসাইটে তাদের নাম, ভারতে অবস্থানের ঠিকানা এবং কারো কারো ছবি প্রকাশ করেছে।
গত ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ের একটি বাড়িতে ওই বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হন, যারা নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে ভারতীয় গোয়েন্দোদের সন্দেহ।
ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই নারীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা বলছেন, জেএমবি, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (আইএম) ও আল জিহাদের সমন্বয়ে ‘আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলা হয়েছে।
এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বর্ধমান শাখার হোতা হিসেবে সাজিদ নামে একজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যিনি বাংলাদেশের নাগরিক। ওয়েবসাইটে তার ছবি না দেওয়া হলেও এনআইএ বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার মুকিমনগরের লালগোলা মাদ্রাসার কাছে থাকতেন তিনি।
আনুমানিক ৪০ বছর বয়সী সন্দেভাজন এই বাংলাদেশির তথ্য পেতে ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্য তিন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি জঙ্গি হলেন- কাউসার, নাসিরুল্লাহ ও তালহা শেখ। এদের প্রত্যেকের জন্যও ১০ লাখ রুপি করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
এনআইএর তথ্য মতে, কাউসার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের বোলপুর ও বর্ধমানের বাবুরবাগে থাকতেন, নাসিরুল্লাহ থাকতেন মুর্শিদাবাদের হাটপাড়ায় আর তালহা নদীয়ার ডাঙ্গাপাড়ার দেবগ্রাম ও বীরভূমের কিরনহারে থাকতেন।
নাসিরুল্লাহর ছবি দিতে না পারলেও কাউসার ও তালহার সম্ভাব্য প্রতিকৃতি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ভারতীয় জাতীয় তদন্ত সংস্থা।
সন্দেহভাজন চার বাংলাদেশির পাশাপাশি বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কেস্টোবটির মাওলানা ইউসুফ শেখের জন্য ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
এছা্ড়া আসামের শাহানুর আলম, বীরভূমের বোলপুরের হাবিবুর রহমান শেখ ও বীরভূমের কির্ণহার-কাজী মার্কেটের আমজাদ আলী শেখের জন্য পাঁচ লাখ রুপি করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বাসিন্দা আবুল কালাম ও বুরহাম শেখ এবং নদিয়ার জহিরুল শেখ ও বর্ধমানের রেজাউল করিমের তথ্য পেতে তিন লাখ রুপি করে অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্ধমানের বিস্ফোরণের পর ওই বাড়ি থেকে আমেনা বিবি ও রুমি বিবি নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, দুই নারীর সঙ্গে জেএমবির সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং তারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের আশ্রয় নেন।
জেএমবি সদস্যরা পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি তৈরি করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দুই দলের শীর্ষ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে এনআইএ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে জঙ্গি নির্মূলে ভারতের পক্ষ থেকে জোরালো ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন,“বাংলাদেশের মাটি থেকে যেভাবে ভারতের জঙ্গিদের উৎখাত করা হয়েছে, একইভাবে ভারতে ঘাঁটি করা বাংলাদেশি জঙ্গিদের নিশ্চিহ্নে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।”
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।