বিএনপির অনুষ্ঠান যাতে কোন মিডিয়া সরসারি সম্প্রচার করতে না পারে সে জন্য সরকার দুপুরের আগ থেকেই সারাদেশে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। 

আজ শনিবার বিকেলে নাটোরের নবাব সিরাজ উদ দৌলা (এনএস) কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এখন দেশে মিডিয়ার কোন স্বাধীনতা নেই। মিডিয়া আজ সত্য কোনো ঘটনা ছাপাতে পারে না। তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। দেখেন আজকের অনুষ্ঠান যাতে সরসারি সম্প্রচার করতে না পারে জন্য দুপুরের আগ থেকেই সারাদেশে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়া বলেন, অবৈধ সরকার জনগণের ওপর চেপে বসেছে। জোর করে ক্ষমতায় বসে জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালাচ্ছে। দেশের ওপর শুধু স্বৈরাচার চেপে বসেনি, নব্য হিটলারের জন্ম হয়েছে, হিটলারী শাসন চলছে। হিটলারী কায়দায় মানুষ মারছে, গুম করছে।

রাজনৈতিক উদ্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের খুনের ঘটনায় যে র‍্যাব সদস্যরা জড়িত রয়েছেন তাদের জেলখানায় জামাই আদরে রাখা হয়েছে। র‍্যাব ‍বাহিনী মানুষ গুম করার জন্য নয়, তাদের বাতিল করতে হবে। তাদের জন্ম হয়েছিলো দেশের শান্তির জন্য। 

এসময় র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসানের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবিও করেন খালেদা।

খালেদা বলেন, ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে তারা দেশের মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এদেশের মানুষ দেখেছে তারা কত নির্মম। কোনো মুসলমান এভাবে মানুষ হত্যা করতে পারে না। দেশের মানুষের জন্য তাদের কোনো ভালোবাসা নেই। তাদের চিন্তা একটাই-শুধু টাকা। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষতায় আসে ততবার শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। সরকারি ব্যাংক থেকে তাদের মন্ত্রী-এমপিরা ইচ্ছে মতো টাকা নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে। এসব ব্যাংক এখন দেউলিয়া। 

খালেদা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির প্রত্যেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আজ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আমিও আছি। মিথ্যা ও অন্যায়ভাবে আমিসহ আমাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। দেশে এমন কোনো দল নেই যাদের রাজনৈতিক কর্মী কারাগারের বাইরে আছেন। এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই যে কাউকে মামলা দিয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। হয়রানি করা হচ্ছে।

সরকার ঠুনকো অজুহাতে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বছরের পর বছর কারাগারে আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন খালেদা।

তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগের আন্দোলনেও আমরা সফল হয়েছি। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ নির্বাচনে ভোট দেয়নি। ১৫৪ আসনে  কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। আরও একবার আমাদের দেশরক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। 

খালেদা বলেন, এখন কিছু বলবো না। তবে যখন যেখানে যে কর্মসূচি দেওয়া হবে, সেখানে সে কর্মসূচিই পালন করে অবৈধ সরকারকে দাবি আদায় বাধ্য করতে হবে।

উল্লেখ্য, রাজধানীসহ সারা দেশ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারণে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।