রাস উৎসব শুরু হচ্ছে ৫ নভেম্বর
সুন্দরবনের দুবলার চরে ৩ দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব শুরু হচ্ছে ৫ নভেম্বর। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এ উৎসব সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বন বিভাগসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে, এ উৎসবকে সামনে রেখে দর্শনার্থীর ছদ্মবেশে চোরা শিকারীর দল হরিণ শিকারের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। তবে হরিণ শিকার রোধ ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। সুন্দরবন জুড়ে বন বিভাগ, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে জারি করা হবে অঘোষিত রেড এলার্ট।
বন বিভাগ ও উৎসব আয়োজক কমিটির সুত্রে জানাগেছে, শত বছর ধরে সুন্দরবনের দুবলার চরে আলোরকোল নামক স্থানে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবছর ১৩১তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। সুন্দরবন বিভাগের হিসেবে এ তথ্যটি পাওয়া গেলেও এরও অনেক থেকে এখানে রাস উৎসব হয়ে আসছে। বাংলা কার্ত্তিক মাসের শেষে বা অগ্রহায়ণের প্রথম দিকের ভরা পূর্ণিমার তিথিতে এ রাস উৎসব উদযাপিত হয়। হিন্দু ধর্মালম্বীরা এ সময় পূর্ণিমার জোয়ারের লোনা পানিতে স্নান করে তাদের পাপ মোচন হবে এমন বিশ্বাস নিয়ে রাস উৎসবে যোগ দিলেও, কালের বিবর্তনে এখন তা নানা ধর্ম-বর্ণের লোকেদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। আবাল-বৃদ্ধবনিতা নির্বিচারে সবার পদচারণায় মূখর হয়ে উঠে এ মেলা ; পরিণত হয় এক মিলন মেলায়।
দুবলার চরের মেলায় লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা যোগে তীর্থ যাত্রী ও দর্শনার্থীরা এসে সমবেত হয় দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। সেই সাথে আসে অসংখ্য বিদেশী পর্যটকও। উৎসবের সময় কুটির শিল্পের বিভিন্ন মালের পসরা সাজিয়ে বসে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী। এ ছাড়া, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আযোজন করা হয়।
বে-সরকারি একাধিক ট্যুরিস্ট কোম্পানী সূত্রে জানা গেছে, রাস উৎসবে যোগ দিতে ইতোমধ্যে অনেক ট্যুরিস্ট লঞ্চ ও বোট বুকিং নিতে প্রস্তুতি শুরু করেছে। অনেকে আবার সুবিধা মত বুকিং না পেলে, হতাশ হয়ে পড়ার আশংকা করছেন।
মেলা উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান মেজর (অব:) জিয়া উদ্দিন জানান, আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে এবার বেশ জমজমাট ভাবে মেলা উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মংলা সহ সুন্দরবনের ৮ টি পয়েন্ট দিয়ে রাস মেলায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ সব পয়েন্ট দিয়ে অসংখ্য নৌকা ও ট্রলারে করে হাজার হাজার দর্শনার্থী আলোর কোলের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশ করবে। মেলায় প্রবেশকারীদের নির্দ্দিষ্ট ফি দিয়ে বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি পত্র নিতে হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও আমীর হোসেন চৌধুরী জানান, রাস মেলা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন ও এর নিরাপত্তায় বন বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থী ও তীর্থ যাত্রীদের জান মালের নিরাপত্তাসহ হরিণ শিকার রোধে বনরক্ষীদের পাশাপাশি মেলায় এবারও র্যাব, কোষ্ট গার্ড ও পুলিশের টহল থাকবে। এ ছাড়া, মেলায় চোরা শিকারীদের রুখতে সব ধরনের দর্শনার্থীর আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া, পূণ্য স্নানের সময় কোন পটকা ফুটানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।