- হোম
- >
- কৃষিজ ও প্রাণিজ
- >
- বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ লুট !
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ঢুকে কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ লুট !
বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় বে-আইনী ভাবে ঢুকে দাপটের সাথে মাছ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে ভারতসহ অন্যান্য বিদেশী জেলেরা ! গোটা উপকূলের চারটি মৎস্য ভাণ্ডারসহ গভীর সমুদ্র এলাকা থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ইলিশ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ লুটে নিচ্ছে ভারত,মিয়ানমার,থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকার জেলেরা। বাংলাদেশের সমুদ্র সীমার এ সমস্যা দীর্ঘ দিনের হলেও, কোন ভাবেই এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর দেশ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ হারাচ্ছে।
উপকূলের জেলে ও মৎস্যজীবী সমিতির নেতারা সম্প্রতি বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এসে সাক্ষাৎ করে এ সমস্যার বিষয় অবহিত করেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবং বাগেরহাট সদর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড মীর শওকাত আলী বাদশাকে। মৎস্যজীবী সমিতির নেতারা বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ সমুদ্র সীমায় ভারতসহ অন্যান্য দেশের জেলেদের দূর্দান্ত প্রতাপে দাপিয়ে বেড়ানোর বিষয় বিস্তারিত অবহিত করেন।
জেলে ও মৎস্যজীবী নেতারা তাকে বলেন, ভারত,মিয়ানমার,থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকার জেলেদের অবৈধ বিচরণ ও মাছ লুট বন্ধ করা গেলে, দেশের মানুষকে ১ শত টাকা কেজি দামে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ খাওয়ানো যাবে। সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ্যাড মীর শওকাত আলী বাদশা এমপি ধৈর্যের সাথে তাদের বক্তব্য শোনেন ও সমস্যাটির দ্রুত প্রতিকারের আশ্বাস দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করে মাছ লুটের সময় কেবল চলতি বছরই এ পর্যন্ত ৮টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারসহ ৭৫ জন বিদেশী জেলেকে আটক করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী সদস্যরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত ১৫ অক্টোবর সুন্দরবন উপকূলের ফেয়ারওয়ে বয়ার কাছে মাছ লুটের সময় বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সদস্যরা একটি ট্রলারসহ ১৪ জন ভারতীয় জেলেকে আটক করে। ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম উপকূলে ৪টি ট্রলারসহ ২০ শ্রীলংকান জেলেকে আটক করে নৌ বাহিনী। ১৮ অক্টোবর সুন্দরবনের ফেয়াওয়ে বয়ার কাছে মাছ ধরার সময় আবারও ১ টি ট্রলারসহ ১৪ ভারতীয় জেলেকে। ২০ অক্টোবর একই এলাকায় মাছ ধরার সময় ট্রলারসহ আবারও ১৪ ভারতীয় জেলে আটকা পড়ে। ২২ অক্টোবর ১৩ ভারতীয় জেলেকে ১টি ট্রলারসহ আটক করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী।
উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় জেলেরা ঢুকে মাছ শিকার করে চলেছে,-এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরা কেবল মাছই ধরে তাই নয়, তারা বাংলাদেশের জেলেদের মারপিট করে জাল, মাছ ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যায়। এরা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ লুটতরাজ করে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে।
অবৈধ অনুপ্রবেশের পর দূর থেকে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর টহল জাহাজ দেখতে পেলে, দ্রুত গতি সম্পন্ন শক্তিশালী ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চালিয়ে স্বল্প সময় মধ্যে ভারতীয় সমুদ্র সীমায় চলে যায়। এর আগে বিভিন্ন সময় বিদেশী জেলেদের আটক করা হলেও, নানা অজুহাতে কূটনৈতিক প্রভাবে তারা অতি অল্প দিনের মধ্যেই মুক্ত হয়ে দেশে ফিরে য়ায়। সমুদ্রসীমা লংঘন করে মাছ লুটের অপরাধে আটক হলেও, বাংলাদেশের আইনে কোন ভারতীয় জেলের দন্ড হয়েছে,-এমন কোন নজির নেই।
অন্যদিকে, ঝড় বা দুর্যোগের কবলে পড়ে বাংলাদেশী জেলেরা অনিচ্ছার বশে ভারতীয় জল সীমায় গিয়ে পড়লে, তাদের বিরুদ্ধে সে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা দিয়ে বছরের পর বছর ভারতীয় জেলখানায় ঘানি টানানো হয়।
দীর্ঘ দিন ধরে ভারতসহ প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের জেলেরা অবৈধ অনুপ্রবেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ সমুদ্র সীমায় ঢুকে মৎস্য সম্পদ লুট করে নিলেও, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল থেকে কোন প্রতিবাদ জানানো হয় না। বরং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ভারতীয় জেলেরা আটক হলে, চট জলদি তাদের মুক্ত করে দিয়ে যেন দায় মুক্তি নেওয়া হয় !
এ সব বিষয় উপকূলীয় মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী জানান, অনেক দেরিতে হলেও এ ব্যাপারে নৌ বাহিনীর টহল ও সতর্ক দৃষ্টি দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় যথেষ্ট সহায়ক হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।