মঙ্গলবার দুপরে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় বিরোধী জোটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ই আগস্ট ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা এবং উপজেলায় কলো পতাকা মিছিল। সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে ১৯শে আগস্ট রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে প্রতিবাদ সমাবেশ। শুধু তাই নয়, ঐ দিন ঢাকার বাইরে সারা দেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে তারা।

 

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ অন্যান্য দাবিতে ২১ থেকে ৩১শে আগস্ট ২০-দলীয় জোটের উদ্যোগে জেলা ও মহানগরে গণসংযোগ করবেন নেতারা।

 

এছাড়া আগামী ১লা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ সব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৩১শে আগস্ট আলোচনাসভা, ১লা সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিকেলে প্রামাণ্য আলোকচিত্র প্রদর্শনী। আর ২রা সেপ্টেম্বর থাকছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা।

 

কর্মসূচি ঘোষণার পর মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, জোটের কর্মসূচিতে সরকার কোনোভাবে বাধা দেবে না।'' তিনি বলেন, ‘‘আমরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আন্দোলন করছি।''

 

৫ই জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের পর বিএনপি জোট নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবি জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে তা বরাবরই প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। দাবির বিষয়ে সরকারের এই উপেক্ষার মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গত রোববার দলের স্থায়ী কমিটি এবং সোমবার রাতে জোট নেতাদের সঙ্গে বসে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেন।

 

সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে জোটের বৈঠকের পর ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ নরম কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে। এবং পর্যায়ক্রমে সেই কর্মসূচি কঠোর হবে।''

 

নরম কর্মসূচির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিএনপি চায় শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে। জনদুর্ভোগ বাড়ে এমন কোনো আন্দোলন করতে চান না তাঁরা। তবে সরকার যদি এ সব দাবির প্রতি শেষ পর্যন্ত অনমনীয় থাকে তাহলে ধীরে ধীরে আন্দোলন কঠোর করা হবে।''

 

তিনি বলেন, ‘‘যেসব কর্মসূচি দেয়া হয়েছে তার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে। গণসংযোগের মাধ্যমে সরকার বিরোধী আন্দোলনে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে।''

 

শামসুজ্জামান দুদুর দাবি, ‘‘দেশের মানুষ এই সরকারকে চায় না। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাই দেশের মানুষকে সম্পৃক্ত করেই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।''

 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপিকে পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলছেন। তাঁদের কথা, এই মুহূর্তে কোনো ধরনের আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেবে না।