সাতক্ষীরায় এক ব্যবসায়ীর মালামাল লুট করেছে সন্ত্রাসীরা
আকরামুল ইসলাম, সাতক্ষীরা
প্রিন্টঅঅ-অ+
সাতক্ষীরায় এক ব্যবসায়ীর দোকান ঘর জোর করে করার পাশাপাশি ওই দোকান থেকে নগদ ৩ লাখ টাকাসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় সদর থানায় এজাহার দিলেও পুলিশ সেটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করেনি। রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের কসমেটিকস ব্যবসায়ী পুরাতন সাতক্ষীরার আব্দুস সাত্তারের ছেলে আমিরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আমিরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩৭/৩৮ বছর ধরে তিনি সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে “আরাফাত বিতান” নামের একটি দোকানে কসমেটিকস ও মনোহরী ব্যবসা করে আসছেন। ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে তিনি প্রায় দুই বছর আগে পুরাতন সাতক্ষীরা নাথপাড়া এলাকার মান্দার দেবনাথের ছেলে পলাশ দেবনাথের কাছ থেকে সুদে দুই লাখ টাকা গ্রহণ করেন। এসময় শর্ত হিসাবে পলাশ তার কাছ থেকে একটি ১০০ টাকা ও একটি ৫০ টাকা মূল্যমানের দু’টি অলিখিত ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। শর্তানুযায়ী প্রতিমাসে ওই দুই লাখ টাকার সুদ দেওয়া স্বত্বেও পলাশ দেবনাথ ওই অলিখিত ২টি ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে নিজের মত করে লিখে দোকান ঘরটি তার কাছে বিক্রি করেছি মর্মে জালজালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ সৃষ্টি করে। এক পর্যায় পলাশ গোপনে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই ওই দোকান ঘরটি তার নামে ইজারা গ্রহণ করে।
বিষয়টি জানতে পেরে পলাশকে তার দুই লাখ টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বললে সে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাৎক্ষনিক ঘটনাটি বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে জানালে তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন। ব্যবসায়ী সমিতির পরামর্শে গত ২৪ জুলাই-১৪ সাতক্ষীরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন মামলা করলে আদালত শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সদর থানাকে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে সদর থানার এসআই কবির হোসেন আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উভয় পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ২৭ জুলাই একটি নোটিশ জারি করেন। এখবর জানতে পেরে পলাশ আরও ক্ষিপ্ত ও বেপরোয়া হয়ে উঠে। পলাশ ও তার সহযোগি মুকুল এবং রওশনের নেতৃত্বে ২৭ জুলাই রাত দেড়টার দিকে তার (আমিরুল) দোকার ঘর আরাফাত বিতানের তালা ভেঙ্গে নিজেদের তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এ বিষয়টি সদর থানার ওসি ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে তাদের পরামর্শে ভাইচ চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ ২ আগষ্ট সালিশী বৈঠকে বসার কথা বলে ঢাকায় চলে যান। এই সুযোগে পলাশ, মুকুল ও রওশন ১৫/২০ জন লোকা নিয়ে গত ৫ আগষ্ট ভোর রাতে দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যেতে থাকে। খবর পেয় দোকানে গেলে পলাশ ও তার লোকজন তাকে বেঁধে রেখে নগদ ৩ লাখ টাকাসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
এসময় তার কাছ থেকে জোর করে আরও ২টি অলিখিত ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। বাড়াবাড়ি করলে জীবনে শেষ করে দেওয়ার পাশাপাশি তার লোকজনদেরকে মিথ্যে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয় সে। পরে দোকান ঘরটি নিজের দখলে নিয়ে পলাশ সেখানে কিছু নতুন মালামাল উঠায়। তাদের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে তাৎক্ষনিক সদর থানায় একটি এজাহার দিলে ওসি বিভিন্ন অজুহাতে মামলা না নিয়ে তাকে আদালতে যেতে পরামর্শ দেন। পরে ৯ আগষ্ট তিনি আদালতে দ্রুত বিচার আইনের ধারায় একটি মামলা দায়ের করলে আদালত তার অভিযোগটি আমলে নিয়ে সেটি এফআই আর হিসাবে গণ্য করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার খবর জানতে পেরে পলাশ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদেরকে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।
তিনি মালামাল ও নগদ টাকাসহ তার দোকান ঘরটি ফিরে পেতে এবং অবৈধ দখলকারী মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামন করেছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।