কাণ্ডারী-২ ও জরীপ-১০ ছাড়া অন্যান্য অনুসন্ধান জাহাজ প্রত্যাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ১০ আগস্ট, ২০১৪
প্রিন্টঅঅ-অ+
মাওয়ায় মাঝ পদ্মায় ডুবে যাওয়া ‘পিনাক-৬-এর উদ্ধার কাজ থেকে কাণ্ডারী-২ ও জরীপ-১০ ছাড়া অন্যান্য উদ্ধারকারী জাহাজ আজ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ও রুস্তম প্রস্তুত থাকবে। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসান বাদল এ ঘোষণা দেন।
লঞ্চডুবির সপ্তম দিনে আজ রোববার দুপুরে অনুসন্ধানকারী জাহাজ কাণ্ডারী-২, জরীপ-১০ এবং উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ও রুস্তুম ছাড়া বাকী সব অনুসন্ধানী জাহাজ ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল আজ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার দুপুরে মাওয়া পদ্মা সেতু রেস্ট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, ধাতব বস্তু সাদৃশ্য ইমেজ নিয়ে পর্যালোচনা শেষে উদ্ধারকাজে চট্রগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের জাহাজ কাণ্ডারী-২ ও জরিপ-১০ ছাড়া উদ্ধার কাজে নিয়োজিত নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লি¬উটিএ ও ফায়ার সার্ভিসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তাদের ডুবুরী দল উদ্ধার কাজে নিয়োজিত থাকবে।
এছাড়া উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ও নির্ভিক ঘটনাস্থলে প্রস্তুত থাকবে। ধাতব বস্তুটিতে ডুবুরীরা এ্যাঙ্কর বাঁধতে পারলেই রুস্তম ও নির্ভিক কাজ শুরু করবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, ডুবুরীরা সাধারণত ১ থেকে ১ দশমিক ৫ নটিক্যাল মাইল মাত্রার স্রোত থাকলেও কাজ করতে পারে। বর্তমানে পদ্মা নদীতে ৫ থেকে ৬ নটিক্যাল মাইল মাত্রার স্রোত রয়েছে। এঅবস্থায় ডুবুরীদের পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, শনিবার দুপুরে যে ধাতব বস্তুটির ইমেজ ধরা পড়েছে তা পিনাক-৬ লঞ্চের কিনা তা শতভাগ নিশ্চিত হতে একমাত্র কান্ডারি-২ ও জরিপ-১০ নামে অনুসন্ধানী জাহাজ কাজ চালিয়ে যাবে।
এছাড়া নৌবাহিনীর সন্ধানী ও তিস্তা এবং বিআইডব্লিউটিএ’র জাহাজ, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্যান্য সমন্বিত উদ্ধারকারী দলগুলোকে অনুসন্ধান কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, ভেসে ওঠা মৃতদেহ উদ্ধার কাজ ও ধাতব বস্তুর ইমেজ যাচাই-বাছাই’র কাজ অব্যাহত থাকবে। নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পদ্মা নদীর ৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সাতদিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে শনাক্ত করার চেষ্টা হয়। কিন্তু পিনাক-৬’ সনাক্ত হয়নি। যেহেতু একটি ইমেজ পাওয়া গেছে তাই এখন আর সমন্বিত উদ্ধারকারী দলের প্রয়োজ নেই।
নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম, কান্ডারি-২ এর কমান্ডার মনজুর করিম চৌধুরী, বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, এসএসপি কুতুবুর রহমান এবং কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধিসহ সমন্বিত উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারণে শনিবার রাত ৮ টার পর থেকে কার্যক্রমের তেমন অগ্রগতি নেই। তবে এ্যাঙ্কর বাধার কাজ রোববার বেলা ১১টা থেকে আবার শুরু হয়েছে। স্রোত ও ঢেউয়ের কারণে ধাতব বস্তুটিতে এ্যাঙ্কর লাগানোর কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
অন্যদিকে সনাতন পদ্ধতিতে লঞ্চটি খুঁজে পাওয়ার আশায় মাওয়া ঘাট সংলগ্ন মেদেনীমন্ডল এলাকার জনগণ রোববার দুপুরে টোটকা অভিযান শুরু করেছেন।
দুপুর ১২টা থেকে নায়লনের রশির মধ্যে ১শ’ ইট ও ১০টি দেশীয় তৈরি গ্রাফি দিয়ে এবং দুই পাশে দুইটি ট্রলার বেঁধে ১২শ’ হাত রশি পদ্মার তলদেশে ছেড়ে দিয়ে টানা জালের মতো টেনে নিয়ে চিরুনি অভিযান চালানো হচ্ছে।
পিনাক-৬ এর ডুবে যাওয়া স্থল থেকে ২শ’ মিটার ভাটির দিকে এই অভিযান চালানো হবে বলে জানান মেঘনা চেইন কপ্পার মালিক হাসান ও ডুবুরি কামাল হোসেন।
তারা জানান, তাদের এই অভিযান শুধু ভাটির দিকে চালানো হচ্ছে। উজানের দিকে তারা যাবেন না।
এ অভিযানে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল অংশ নিয়েছে। প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।