হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদছে ৭ বছরের ধর্ষিতা শিশু, মিলছে না সুচিকিৎসা
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৯ আগস্ট, ২০১৪
প্রিন্টঅঅ-অ+
ভোলার লালমোহনে ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাঁদছে সাত বছরের একটি শিশু। তার পাশে বসে শুধুই শান্তনা দিচ্ছেন তার মা। লালমোহন উপজেলার আলী রাজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর এই ছাত্রীটি ব্যাথার যন্ত্রণায় কাঁদলেও তার কান্না শুনতে পৌঁছাচ্ছে না পুলিশ কিংবা চিকিৎসকদের কানে।
গত দুই দিন ধরে ধর্ষিতা শিশুটি ভোলা সদর হাসপাতালের বিছানায় কাতরালেও 'মামলা হয়নি' অজুহাতে সুচিকিৎসা পাচ্ছে না শিশুটি। এদিকে ধর্ষিত হওয়ার চার দিনেও ধর্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন মামলা নিচ্ছে না। অপরদিকে ধর্ষনের ঘটনার পর থেকে ধর্ষক চাচাতো ভাই সাখাওয়াত (২২) পলাতক রয়েছে।
হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার গাইনী বিভাগের ৯৭ নম্বর বিছানায় শুয়ে ব্যাথার যন্ত্রনায় কাঁদছে ধর্ষিতা শিশুটি।
শিশুটির মা জানান, গত কয়েকদিন আগে তার দুই মেয়ে একই ইউনিয়নের লর্ডহার্ডিঞ্জ গ্রামে নানা বাড়িতে বেড়াতে যায়। গত বুধবার সন্ধ্যার সময় ওই বাড়িতে তার মেয়েটি যখন একা ঘুমিয়ে ছিল তখন তার চাচাতো ভাই সাখাওয়াত ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত মেয়েটিকে কোলে করে তুলে ঘরের পেছনে চালতা গাছ তলায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। সে সময় মেয়ে চিৎকার দিলেও ধর্ষক সাখাওয়াত শিশুটির মুখ চেপে ধরে।
তিনি বলেন, একদিকে বাহিরে বৃষ্টির শব্দ, অন্যদিকে শিশুর মুখ চেপে ধরার কারণে সময় মতো তার চিৎকার শুনতে পারেনি কেউ। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে তার বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু রক্ত পড়া বন্ধ না হওয়ায় তাকে পরদিন লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পরমর্শ দিলে গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাকে ভোলা সদর হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুর ক্ষত স্থানে কয়েকটি সেলাই পড়েছে। এদিকে শিশুটি ধর্ষিতা হওয়ায় শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ তার কোন সুচিকিৎসা দিচ্ছে না চিকিৎসকরা।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ডা. বুলবুল পারভীন বনিক বলেন, শুক্রবার শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এই মুহুর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে একই হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডাঃ সাইদুল বাশার বলেন, শিশুর অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন যে শিশুটি ধর্ষিত হয়েছে। তাই ধর্ষিতা শিশুর পূর্ণ চিকিৎসা দিতে হলে প্রথমে থানায় মামলা করতে হবে। এরপর নারী চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ার কারণে তার সু-চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সাহিদুর রহমান বলেন, ধর্ষনের ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং ধর্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। চার দিনেও মামলা না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা মামলা দিতে গড়িমশি করছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।