গাইবান্ধার জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলায় ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় ৬ লাখ মানুষের একমাত্র চিকিৎসার আশ্রয়স্থল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। সরকার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও জনবল ও ডাক্তার স্বল্পতার কারণে উদ্বোধনের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবায় কোনো কাজে আসেনি। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ২৪ জন ডাক্তারের স্থলে রয়েছেন মাত্র ২ জন ডাক্তার।

এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুকুর মোল্লার বাড়ি রাজশাহী বিভাগীয় শহরে হওয়ায় তিনি মাসে ২-১ দিন অফিসে হাজিরা দেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে ডাক্তার মলয় কুমার একাই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। মেডিসিন, গাইনি, এনেসথেসিয়া, ডেন্টাল ও সার্জারি বিভাগ ডাক্তার শূন্য অবস্থায় রয়েছে। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও সেটি রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে তালাবদ্ধ। এক্স-রে, ইসিজি, মেশিন, প্যাথলজিক্যাল ও ডেন্টাল ইউনিট থাকলেও সেগুলো কাজে আসছে না।

অনেক সময় ডাক্তার না থাকায় আয়া, ওয়ার্ড বয় চিকিৎসা ব্যবস্থা দিয়ে থাকেন। ফলে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্ঠিত মঙ্গাকবলিত উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নত চিকিৎসার একমাত্র আশ্রয়স্থল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই যেন রুগ্ণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পরও যেন রুগ্ণতা কাটছে না। বর্তমানে দুই জন ডাক্তার থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি থেকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ভরসা যেন আকাশ কুসুম।

কর্মরত চিকিৎসক ডা. মলয় কুমার সরকার জানান, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি অল্পদিনের মধ্যে ডাক্তারের শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে।

এদিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে মেডিকেল অফিসারের পদ নামে মাত্র। শোভাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দীর্ঘদিন থেকে একমাত্র সহকারী মেডিকেল অফিসার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ১ম শ্রেণির আবাসিক ভবনগুলো প্রধান অফিস সহকারী বহিরাগত লোকজনদের মাঝে ভাড়া দিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দেখে যেন মনে হয় গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে টিএইচএ ডা. সুকুর মোল্লা জানান, শূন্য পদে ডাক্তার পোস্টিং এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। অন্যান্য বিষয়গুলো তিনি খতিয়ে দেখবেন।