বেগম ফজিলাতুন্নেছার ৮৪তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রকাশ : ০৭ আগস্ট, ২০১৪
প্রিন্টঅঅ-অ+
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার ৮৪ তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল।
দেশের এই মহিয়সী নারী ১৯৩০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সাথে তাকেও ঘাতক-খুনীরা হত্যা করে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বাণী দিয়েছে। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতিগঠনে বিপুল অবদান রেখেছেন। রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সময়ে স্বামীর কারাবরণকালীন তিনি হিমালয়ের মতো স্থির ও অবিচল থেকে স্বামীর কারামুক্তির পাশাপাশি তাঁর অনুপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সকলকে মূল্যবান পরামর্শ ও সহযোগিতা করতেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানে কারাবন্দী স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন বলে বাণীতে রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার ৮৪ তম জন্মবার্ষিকী জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃকি সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বনানী কবরস্থানে শহীদ ফজিলাতুন্নেছার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ শেষে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিমসংগঠন বাদ আছর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে মিলাদ ,দোয়া মাহফিলও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ সকালে বনানী কবরস্থানে বেগম ফজিলাতুন্নেছার কবরে শ্রদ্ধা জানানো এবং বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করেছে। ছাত্র লীগ এ উপলক্ষে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আজ এক বিবৃতিতে আগামীকাল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেবল একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিনীই নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী।
বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধীকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। ছায়ার মত অনুসরণ করেছেন প্রাণপ্রিয় স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে । এই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য অবদান রেখেছেন। জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন, এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এভাবে ফজিলাতুন্নেছার স্মৃতিচারণ করে বলেন, তাঁর স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। মনেপ্রাণে তিনি একজন আদর্শ বাঙালি নারী ছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা, শান্ত ভাব , অসীম ধৈর্য্য ও সাহস নিয়ে জীবনে যে কোন পরিস্থিতি তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবেলা করতেন। জীবনে কোন বৈষয়িক চাহিদা ও মোহ তার ছিল না।
সাজেদা চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সময় কাটিয়েছেন কারাগারে। তাঁর অবর্তমানে মামলা পরিচালনার ব্যবস্থা করা, দলকে সংগঠিত করতে সহায়তা করা, আন্দোলন পরিচালনায় পরামর্শ দেয়াসহ প্রতিটি কাজে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
শুধু তাই নয় তিনি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন। সংগঠনের জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি অনুপ্রেরণা, শক্তি, সাহস, মনোবল ও প্রেরণা যুগিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে।
বেগম ফলিজাতুন্নেছাকে নিতান্তই একজন সাদাসিধে নারী উল্লেখ করে সংসদ উপনেতা বলেন, কোন লোভ-লালসা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি স্কুল কলেজ থেকে শিক্ষা নেননি, তারপরেও তার কাছে ছিল শিক্ষার মূল উপাদান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।