আপন ঠিকানায় শিশু শিখা
দীর্ঘ এক মাস পর ট্রাক চাপায় আহত শিশু মুর্শিদা আক্তার শিখা খুঁজে পেল তার আপন ঠিকানা। দূর্ঘটনায় মাকে হারিয়েও খুঁজে পেল স্নেহ ভরা বাবার কোল।
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের কাটাখালি ব্রীজ এলাকায় গত ৫ জুলাই দুপুরে শিখাকে কোলে নিয়ে তার মা মুন্নি বেগম সড়কের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় পলাশবাড়ি উপজেলার সড়ক ও জনপদ বিভাগের একটি ট্রাক তাদের দুজনকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মা নিহত হন। গুরুতর আহত শিশু শিখাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনার পর তাদের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি।
দুদিন মর্গে থাকার পর মা মুন্নি বেগমের মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুলের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিশুটির পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তাকে এক মাস ধরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় অর্থোপেডিক্স বিভাগের ১৯ নম্বর বেডে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শিশু শিখা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়নের বেড়ামালঞ্জা গ্রামের গোলাম মোস্তফার মেয়ে।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ শিশু শিখাকে হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর শিশুটির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিক, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় লেখালেখি হলে নজরে আসে শিখার স্বজনদের।
১৪ জুলাই শিশু শিখার দাবিদার বাবা গোলাম মোস্তফা ও নানা আবুল কালামসহ পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধারের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। কিন্তু দাবিদার বাবা ও নানা শিশুটির প্রকৃত অভিভাবক কিনা তা নিয়ে সৃষ্টি হয় জটিলতা। পরে শিখার বাবা ও নানাকে আদালতে আবেদনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। শিখার বাবা গোলাম মোস্তফা ও নানা আবুল কালাম দুজনেই শিখার দাবিদার জানিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (গোবিন্দগঞ্জ) আবেদন করেন।
আবেদনের পর বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী সরেজমিনে তদন্ত করে শিশু শিখার পরিচয় সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়। পরে বিচারক যাচাই-বাছাই শেষে শিশু শিখাকে তার বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে হস্তান্তরের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম জাহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার তালুক কানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন আলী ও ইউপি সদস্য জাফিরুল ইসলাম জাফুসহ স্থানীয়দের উপস্থিতিতে শিশু শিখাকে তার বাবা গোলাম মোস্তফার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে এবং মামলার হওয়ার পর থেকে ট্রাক ড্রাইভার ওয়াজেদ আলী পলাতক রয়েছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।