খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়
বিধাতার নিজ হাতে গড়া প্রকৃতির হাতছানি। পাহাড় আর অরণ্য। সর্পিল পিচঢালা সড়ক। পাহাড়ের বুক ছিড়ে নেমে আসা জলপ্রপাত উপভোগ করতে খাগড়াছড়ির সবকটি পর্যটন স্পটে ভিড় করছেন নানা বয়সী পর্যটকরা। শিশু, নারী-পুরুষ সব বয়সীরা মেতে উঠেছেন ঈদ আনন্দে। যেখানে গেছি সেখানে ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের বাঁধভাঙা জোয়ার। এবারের ঈদে স্থানীয় পর্যটকদের পাশাপাশি ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকেরা ঈদের বাড়তি আনন্দ পেতে ছুটে এসছে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন স্পটে।
খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রহস্যময় সুরঙ্গ, জেলা পরিষদ পার্ক মাটিরাঙ্গার রিছাং ঝর্ণা, শতবর্ষী বটগাছ, ভগবান টিলা, দীঘিনালার তৈদুছড়া ঝর্ণা, থাংঝাং ঝর্ণা, গোবিন্দ মানিক্যের খনন করা দীঘি, দীঘিনালা বনবিহার, মানিকছড়ির রাজবাড়ি,রামগড়ের রামগড় লেক, চা বাগান পানছড়ির রাবার ডেম ও অরন্যকুটির সবকটি স্পটেই ঈদের দিন থেকেই উপচে পড়া ভিড় লেগে আছে। ঈদের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার বিকালেও বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের এ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকদের পাশাপাশি খাগড়াছড়ির সর্বস্তরের মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে এ সব স্পটে আনন্দে উদযাপনে মেতেছেন। কেউই যেন অপার এ আনন্দকে হাতছাড়া করতে চাননি। প্রতিটি স্পটেই বাড়তি উৎসবে মেতেছিলেন নব দম্পতি, কপোত-কপোতি আর প্রেমিক-প্রেমিকারা।
ছোট্ট ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে যুবক-যুবতীরা লেকের ঝলমল পানিতে নৌকায় চড়ে প্রকৃতি উপভোগ করছেন। মাঝ বয়সীরা প্রকৃতির ছায়াতলে আড্ডায় মেতেছেন। নব দম্পতি, কপোত-কপোতি আর প্রেমিক-প্রেমিকারা পাহাড়ের বুক ছিড়ে নেমে আসা ঝড়নাধারার সাথে আলিঙ্গন করেছে যে যার মতো। দুর পাহাড়ে ছুটে চলার ক্লান্তি যেন মিশে গিয়েছিল আনন্দ জোয়ারে। ছোটদের ছুটোছুটি, বড়দের আড্ডা আর তরুন-তরুনীদের ঝড়নাধারার সাথে আলিঙ্গনের ফলে পর্যটন স্পটগুলো যেন তাদের প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে দীঘিনালার তৈদু ও থাংঝাং ঝর্ণায় বেড়াতে আসা পাঁচ বন্ধুর একজন তমাল বলেন, ‘আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে দেশের অনেক পর্যটন স্পট ঘুরেছি। কিন্তু দীঘিনালার তৈদু ও থাংঝাং ঝর্ণা আমাদের সব দেখাকে মলিন করে দিয়েছে। থাংঝাং ঝর্না ও তৈদু ঝর্নায় আমরা অনেক আনন্দ করেছি ওমজা করেছি। তৈদু ঝর্নায় যাওয়ার উঁচুনিচু পথ, আশেপাশের ঝোপঝাড়, জলপ্রপাত তাদেরকে মুগ্ধ করেছে বলেই জানালেন আরেক বন্ধু ফরহাদ। সরকারের কাছে দীঘিনালার পর্যটন শিল্পের আরও প্রচার-প্রসারের দাবী করেন করেন সাজু নামের অপর বন্ধু।
ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকরা আলুটিলার রহস্যময় সুরঙ্গ দেখতে ভুলেননি। গা ছমছম করা আলুটিলার রহস্যময় সুরঙ্গ আর রিছাং ঝর্ণা এই সময়ের পর্যটকদের কাছে স্বপ্নের চারণ ভুমি এমনটাই বললেন চট্টগ্রাম থেকে ছুটে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আইরিন। তার মতে পাহাড়ের বুক ছিড়ে নেমে আসা ঝরনা ধারার সাথে মিতালী আর ২৮২ ফুটের সুরঙ্গ অতিক্রম না করলে জীবনটাকেই উপভোগ করা হতোনা।
এদিকে ঈদের তৃতীয় দিন সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগ করেছেন খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রহস্যময় সুরঙ্গ, রিছাং ঝর্ণা, মাটিরাঙ্গার শতবর্ষী বটগাছসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো। সেনা পরিবারের সদস্যদের পদচারনায় পর্যটনস্পগুলো এদিন ছিল মুখরিত।
সবমিলিয়ে ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়ির সবকটি পর্যটন স্পটে যেন তিলধারণের ঠাঁই নেই। পাহাড়ী কন্যা খাগড়াছড়ির আকাশ-পাহাড়ের মিতালিও উপভোগ করছেন পর্যটকরা।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।