ভারতে ভূমিধসে গ্রাম বিধ্বস্ত: ১৫০জন মাটিচাপা
ভারতের মহারাষ্ট্রে ভূমিধসে প্রায় পুরো একটি গ্রাম চাপা পড়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত দেড়শো থেকে দুশো মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিকেল পর্যন্ত ১৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে প্রশাসন স্বীকার করছে।
ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, তবে প্রবল বৃষ্টি ও খারাপ রাস্তাঘাটের জন্য তাদের কাজ ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
মহারাষ্ট্রের পুনে শহর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে আম্বেগাঁও তালুকা বা ব্লক, সেখানেই পাহাড়ের কোল ঘেঁষে মালিন গ্রাম।
গত কয়েকদিন ধরেই ওই অঞ্চলে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল, আর তার জেরে বুধবার সকালে একটা আস্ত পাহাড়ি টিলাই আচমকা ধসে পড়ে নিচের মালিন গ্রামে, পাহাড়ের পাদদেশে বাড়িগুলোতে বহু মানুষ তার নিচে চাপা পড়েন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভারতে যে ন্যাশনাল ডিসাস্টার রেসপন্স ফোর্স গড়ে তোলা হয়েছে, সেই বাহিনীর সদর দফতরে এই খবর পৌঁছয় বেলা পৌনে এগারোটা নাগাদ, বলেন বাহিনীর ইনস্পেক্টর জেনারেল সন্দীপ রাই রাঠোর।
“ঘটনাস্থলে পৌঁছতে আমাদের একটু বেগ পেতে হয়েছে, কারণ রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। বৃষ্টিতে ভেসে আসা কাদামাটি আর ময়লায় চারদিক ছেয়ে আছে।” বিকেলের মধ্যে অবশ্য একশোরও বেশি উদ্ধারকারী ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান, পাঁচটার মধ্যে তারা মোট পাঁচজনকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
সেই সঙ্গেই উদ্ধার করা হয় অন্তত দশজন গ্রামবাসীর মৃতদেহ।
পুনেতে প্রশাসন যে কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে, তারা জানায় মোট দেড়শো থেকে দুশো মানুষ ধসের নিচে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আর রাজধানী মুম্বাই থেকে মালিন গ্রামের দিকে রওনা হওয়ার আগে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহান আরও নির্দিষ্টভাবে বলেন, সংখ্যাটা হবে ১৬০র মতো। “প্রাথমিকভাবে আমরা অনুমান করছি মোট ৪৪টা বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে আর এই বাড়িগুলোর ভেতর ১৬০জনের মতো চাপা পড়েছেন।”
মহারাষ্ট্রের যে এলাকায় এই ভূমিধসটি ঘটেছে সেটি রাজ্যের খুব অনগ্রসর, গরিব এলাকা বলেই পরিচিত। আম্বেগাঁও তালুকা আসলে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল, সেখানকার রাস্তাঘাটও মোটেই ভাল নয়।
যে বাড়িঘরগুলো ধসে চাপা পড়েছে সেগুলোর প্রায় কোনটিই পাকা বাড়ি ছিল না, অতিবৃষ্টির ফলে যে সাঙ্ঘাতিক ধস নামে তা সামলানোর ক্ষমতাই ছিল না ওই সব বাড়িঘরের।
তবে এলাকার স্থানীয় এমপি ও শিবসেনা নেতা শিবাজীরাও পাটিল দিল্লিতে দাবি করেন সেখানে এরকম কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ইতিহাস নেই।
“ভীমাশঙ্কর মন্দিরের কাছে ওই পাহাড়ি এলাকাটি উপজাতি-অধ্যুষিত, তবে সেখানে কিন্তু এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রথম ঘটল, আগে কখনও এমন ঘটেনি,” তিনি বলেন।
তবে মালিন গ্রামের ভূমিধসে হতাহতের সংখ্যা শেষ পর্যন্ত কত হবে, প্রশাসন সেটা এখনও আন্দাজই করতে পারছে না।
নিহতদের অনেকের স্বজনরা হয়তো সরকারি ক্ষতিপূরণ নেওয়ার মতো অবস্থাতেও থাকবেন না, কারণ গ্রামের অনেক পরিবারই ভূমিধসে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারেন এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।