একটি নতুন জামার জন্য মেঘনাপাড়ে শিশুরা.....
মেঘনার উপকূলীয় অঞ্চল ঘুরতে গেলে দূর থেকে মনে হয় শিশুরা মেঘনাপাড়ে খেলছে। একটু এগিয়ে গেলে মনে হয় শামুক-ঝিনুক খুঁজছে কিন্তু কাছে গিয়ে দেখা যায় আসলে তারা ইটের কনা কুড়াচ্ছে।রোববার সকালে এমন চিত্র চোখে পড়লো লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদী ভাঙন কবলিত এলাকায়।
রামগতি বাজার সংলগ্ন নদী ভাঙন, রামগতি-বিবিরহাট সড়ক ভাঙন ও রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের চরম ভাঙনে ওই অংশ ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে। ওই ভাঙন এলাকায় সড়কের ইটের টুকরো কনা কুড়াচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। কড়াই ও টুকরি ভরে তারা ইটের টুকরা রাস্তার পাশে স্তুপ করছে এবং বিক্রি করে এবারের ঈদের জামা কিনতেই তাদের এ প্রচেষ্টা।
মরিয়ম(৭), খালেদা (৫) ও লা ইজুদের (৬) মেঘনায় সব হারিয়ে এখন তারা মেঘনাপাড়ে ঝুপড়ি ঘরে তাদের বসবাস। ঈদ নিয়ে তাদের দিন মজুর বাবা-মায়ের ভাবনা নেই কেননা ভাত-কাপড়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তাদেরও কোনমতে টিকে থাকা। সল্প উপার্জিত টাকায় সংসারই চলে না, তাই তো তাদের আকাশে ঈদের চাঁদও নেই। শত চেষ্টায় হয়তো স্ত্রীর শরীর ঢাকতে পারবে কিন্তু সন্তানদের নতুন জামা দিতে পারবে না তাদের হতভাগ্য বাবারা।
এজন্য ইটের টুকরা কুড়িয়ে নতুন জামা কেনার চেষ্টা করছে অসহায় শিশুরা। শুধু শিশুরাই নয়, উপার্জনের প্রত্যাশায় অসহায় নারীদেরও ভাঙা ইট কনা কুড়াতে দেখা গেছে।
অসহায় এক শিশু জানায়, নদীর কূলে পড়ে থাকা ইট কুড়িয়ে বিক্রি করে ঈদে নতুন জামা কিনবো। টাকা বাঁচলে চুলের লাল ফিতাও কিনবো।
মেঘনার ভয়াবাহ ভাঙনে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার হাজার-হাজার পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। রাস্তার দু’পাশে, অন্যের পরিত্যক্ত জমিতে কিংবা বেড়ি বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অসহায় মানুষ। তাদের দেখার কেউ নেই এবং তাদের ঈদের আনন্দও নেই।
মেঘনার ভাঙনের শিকার রশিদ মিয়াঁ জানান, আমাগো বাড়িঘর নদীয়ে তিনবার ভাঙছে। আমাদের আর কিছু নাই। এই ঈদে হোলাহাইনের একটা কুত্তা কিনে দেয়ার উপায় নাই। ঈদের নতুন জামা এখন শুধুই স্বপ্ন।
লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রয়োজনের তুলনা বরাদ্দ একেবারেই কম ঈদ উপলক্ষে অসহায় পরিবারগুলোকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ ‘দুইশ’ পরিবারের মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।