ফলকন উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে মামলা
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরফলকন উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী লক্ষ্মীপুর সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাকেরসহ চারজনকে আসামি করা হয়।
জানা যায়, উপজেলার চরফলকন উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ভুয়া ভোটার দিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করা ও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ না করে মৃত ও অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাসহ নীতিমালা অনুসরণ না করে প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিভাবক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মোশারেফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, মো. ইউছুফ ও আবদুর রহিম বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিচারিক হাকিম মামলাটি আমলে নিয়ে সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য আসামিদের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাকের, নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তাদের ‘প্যানেলের’ প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃত, ভুয়া ও অন্য প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের নাম অন্তর্ভুক্ত করে এবং খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও তালিকা অনুমোদনের পূর্বে পরিচালনা কমিটির কোনো সভা না করেই অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেন। এ ক্ষেত্রে তারা ভোটার তালিকার ১৬৪ নম্বর ক্রমিকের ভোটার মো. কবির হোসেনের মিশু বেগম নামে কোনো মেয়ে না থাকলেও এ নাম ব্যবহার করে তাকে এবং মিজানুর রহমান ও আকবর হোসেনসহ হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমির পাঁচ শিক্ষার্থীর অভিভাবককে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, নিজেদের ‘প্যানেলকে’ জয়ী করার লক্ষে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক মনির হোসেনকে ভোটার করে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন করেন। যা বেসরকারি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনী নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
এমনকি অভিভাবক সদস্য পদে নির্বাচনের ভোটগ্রহণে ব্যালট পেপারে তারা ‘প্যানেলের’ প্রার্থীদের নাম আগে রাখার জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশে নীতিমালায় উল্লেখিত ‘অধ্যক্ষের’ অনুযায়ী না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো করেছেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাকের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
যোগাযোগ করা হলে নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটর তালিকায় কোনো অনিয়ম হলে সেই দায় প্রধান শিক্ষকের। এটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমার দায়িত্ব শুধু ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল জানান, ভোটার তালিকায় অনিয়মের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।